গুগল ম্যাপস সম্পর্কে ২১ টি তথ্য যা আপনার জানা অবশ্যই উচিত

Tags

আমাদের দেশে গুগল ম্যাপ যতটা কাজের উন্নত দেশে এটি তার চাইতে কয়েকগুনে বেশি কাজের। আমাদের দেশেও আমরা গুগল ম্যাপ নানাবিধ কাজে ব্যবহার করি। তবে চলুন মিলিয়ে দেখি এসবের সাথে আমরা পরিচিত বা এগুলো সম্পর্কে আমরা জানি কিনা। না জানলেও আসুন গুগল ম্যাপ এর ২১ টি টিপস ও ট্রিকস সম্পর্কে জানি, যা অবশ্যই আপনার জানা উচিত।

দূরত্ব মাপা :

গুগল ম্যাপ আপনাকে দুটি বিন্দুর ভেতর দুরত্ব মাপার সুবিধা দেয়। এখানে আপনি একদম পয়েন্ট টু পয়েন্ট দুরত্ব নির্নয় করতে পারবেন। অথবা একটি সোজা রাস্তার দুরত্ব একবিন্দু থেকে অন্য বিন্দুতে কত তা নির্নয় করতপ পারবেন।
এজন্য আপনাকে যেকোন লোকেশনে ড্রপ পিন দ্বারা হোল্ড করতে হবে। এবং ড্রপ পিন এর ওপর চাপ দিলে কতগুলো এখানে অপশন পাওয়া যাবে; এখান থেকে Measure Distance এ ক্লিক করতে হবে।এভাবে আপনি দুরত্ব মাপতে পারবেন।

রিয়েল টাইম লোকেশন:

Share your location in real time নামে গুগল ম্যাপে নতুন ফিচার পাওয়া যাবে। এর মাধ্যমে আপনি অন্যদের জানাতে পারবেন আপনি এখন কোথায় আছেন। এজন্য মেনু থেকে Share Location এ ক্লিক করতে হবে তারপর ডিউরেশন সিলেক্ট করে, গুগল কনট্যাক্ট থেকে মানুষ সিলেক্ট করতে পারবেন এবং তাদের ভেতর লোকেশন শেয়ারিং শুরু করতে পারবেন।

গুগল ম্যাপ লাইট মোড :

গুগল ম্যাপ এর একটি লাইট মোড রয়েছে। এখানে ইন্টারনেট খরচও আগের থেকে কম। তবে এটি কেবল ওয়েব ভার্সনে ব্যবহার করা যাবে মাত্র। মোবাইল বা কম্পিউটারের ব্রাউজারনএর মাধ্যমে এটি ব্যবহার করা যাবে।এই লিংক ব্যবহার করে আপনি লাইট মোড ব্রাউজ করতে পারবেন। ডান পাশের নিচের একটি লাইটনিং বাটন নিশ্চিত করবে আপনি লাইট মোডে আছেন।

স্ট্রিট ভিউ :

গুগল ম্যাপ ব্যবহারকারীরা আমরা নিশ্চয়ই এই স্ট্রিট ভিউ এর সাথে পরিচিত।এর মাধ্যমে আমরা স্ট্রিট ভিউ এভেইলেবল এমন স্হানের আশেপাশের সবকিছু দেখতে পারি। তবে উন্নত বিশ্বে থাকলেও; বাংলাদেশের সব জায়গায় এটি উপযোগী নয়।

ডাউনলোড ম্যাপ :

এর মাধ্যমে আপনি কোনো নির্দিষ্ঠ একটি স্হানের ম্যাপ ডাউনলোড করে রাখতে পারবেন অফলাইন ব্যবহারের জন্য। যখন আপনার কাছে ইন্টারনেট থাকবে না; তখন সেই জায়গা গুলো আপনি আপনি ডাউনলোডেড ম্যাপ থেকে দেখতে পারবেন। আপনি যেকোন লোকেশন এর নামে ক্লিক করার পর " Download" অপশন থেকে ম্যাপটি ডাউনলোড করতে পারবেন।

একাধিক থামার জায়গা :

আপনার ট্রিপে যদি একাধিক থামার জায়গা থাকে বা স্টপ থাকে; তবে ম্যাপ অ্যাপে প্রথম একটি স্টপ অ্যাড করুন। তারপর ডানের ওপরের ভার্টিকাল ডটে ক্লিক করে Add Stop এ ক্লিক মাল্টিপল স্টপ অ্যাড করুন। একই ভাবে পরবর্তী স্টপ অ্যাড করুন।

প্রয়োজনীয় থামার জায়গা :

চলার পথে আপনি আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন স্টপ সিলেক্টেড করে রাখতে পারবেন। চলার পথে পেট্রোল পাম্প,রেস্টুরেন্ট ইত্যাদি স্হান সেট করে রাখলে, যখন আপনার আশেপাশে এগুলো আসবে; তখন আপনি সিংনাল পাবেন। নেভিগেশন মোডের সার্চ বারে ক্যটাগরি সিলেক্ট করার মাধ্যমে আপনি এই সুবিধা পাবেন।

লেবেল যোগ করা :

গুগল ম্যাপে আপনি এমন সব জায়গায় লেবেল বসাতে পারবেন যা হয়ত গুগল ম্যাপে যোগ করা নেই। আপনার পছন্দের স্হান, যাত্রা বিরতি স্হান বা যেকোন জায়গা যেখানে আপনি যান। লেবেল যোগ করার পর সাার্চ বারের সার্চ করেও আপনি এসব লেবেল খুজে পাবেন। ট্যাপিং ও হোল্ডিং এর মাধ্যমে প্রথমত পিন মেনুতে প্রবেশ করুন তারপর Label এ ক্লিক করেনLabel বসানোর কাজ করুন।

ট্রাফিক চেক :

উন্নত বিশ্বে এটি গুগল এর অন্যতম জনপ্রিয় ফিচার। যখন কেউ কোনো জায়গা যাওয়ার জন্য প্লান করে; বা যাত্রা করে - তখন এই ফিচারটি তাদের আগেভাগে অবগত করে রাস্তায় ট্রাফিক আছে কিনা। পাশ্ববর্তী দেশ ভারতে থাকলেও বাংলাদেশে এই ফিচার কাজ করে না।

পার্কিং লোকেশন :

দৈনন্দিন ড্রাইভিং এরবজন্য আপনি ম্যানুয়ালি আপনার গাড়ির জন্য পার্কিং স্পেস খুজে বের করে রাখতে পারবেন। আপনার কারেন্ট লোকেশন ব্লু ডট এর ওপর ক্লিক করে " save your parking "এর ওপর ক্লিক করে আপনি আপনার পার্ক করা লোকেশন সেট করতে পারবেন। এতে করে আপনার গাড়ি খুজে পেতে আপনার অনেক সুবিধা হবে।

টোল, হাইওয়ে,ফেরী এড়িয়ে চলা:

গুগল ম্যাপ এর এমন অনেক ফিচার রয়েছে, যা আমাদের দেশে উপযোগী নয়। তার মধ্যে এটি একটি। চলার পথে টোল, ফেরী আপনার ব্যায় বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই এই ফিচার ব্যবহার করে টোল - ফেরী ইত্যাদি এড়িয়ে নতুন রুট তৈরি করে নিয়ে চলতে পারবেন।

গুগল ম্যাপে অবদান রাখুন :

মেনু থেকে Your Contributions এ ক্লিক করে আপনি গুগল ম্যাপে অবদান রাখতে পারবেন। এখানে আপনি রিভিউ লেখা, নতুন জায়গা যোগ করা এাব কাজের মাধ্যমে পয়েন্ট বাড়াতে পারবেন। আপনার আশেপাশের লোকেশন এর মাধ্যমে উন্নত করা সম্ভব। পয়েন্ট বাড়ার সাথে সাথে আপনি গুগল এর বিভিন্ন সেব। ফ্রি পাবেন। যেমন : গুগল ড্রাইভ ফ্রী স্টোরেজ।

নতুন জায়গা যোগ করুন :

Your Contribution থেকে নতুন জায়গা যোগ করার জন্য আপনি তেমন অপশন পাবেন না। তবে আপনি মেনুর ভেতর থেকে নিচে Add a missing place বাটনে ক্লিক করে সহজেই নতুন যেকোন জায়গা যোগ করে; তা গুগলে রিভিউ এর পাঠিয়ে দিতে পারবেন।

লোকেশন ইতিহাস

Your Timelines > Recent Places থেকে আপনি সম্প্রতি আপনার রুট অনুযায়ী যে যে জায়গা ভিজিট করেছেন; তা দেখতে পারবেন। এটা আমাদেরর অনেকটা ভীত করে যে গুগল আমাদের ট্র্যাক করছে। তবে খারাপ ভাবলেই খারাপ। আমাদের এর ভালো দিক বিবেচনায় আনতে হবে।

একটি রাইড নিন :

উবার বা পাঠাও এর মত গুগল ম্যাপ অ্যাপ এর মাধ্যমে আপনি call a ride সুবিধা পেতে পারেন। এটা আপনার এলাকায় একটা রাইড ভাড়া দেয়ার সার্ভিা খুজবে এবং আপনাকে সে বিষয়ে অবগত করবে। আমাদের দেশে এসব ফিচার এভেইলেবল নেই।

এক আঙুলে জুম :

আমরা সাধারনত জুম করার জন্য দুই আঙুল ব্যবহার করি। তবে এক আঙুল দিয়ে। স্ক্রীনে ডাবল ক্লিক করে জুম করে; সেই আঙুল ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খুব সহজেই আমরা এই কাজটি করে পারি।

সরাসরি নেভিগেশন মোড ওপেন :

আপনি যদি আপনার যাত্রার জন্য গুগল ম্যাপকে ভরসা করেন, তবে নেভিগেশন মোড এর বিকল্প আপনার নেই। তাই ম্যাপ অ্যাপে ডাইরেক্ট নেভিগেশন মোড সিলেক্ট করতে আপনাকে; directions এ সার্চ করতে হবে। অতপর Direction Button থেকে best route and default commute method selected করতে হবে।

স্পীড লিমিট :

Velociraptor একটি এন্ড্রয়েড অ্যাপ যার মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন এলাকার জন্য গুগল ম্যাপ এর স্ক্রীনে একটি স্পীড লিমিট উইজাড পাবেন। এতে করে কোন এলাকায় কত স্পীড রাখতে হবে সে বিষয়ে ধারনা পাবেন।

CO2 Emission

আপনি যদি পরিবেশ বিষয়ে সচেতন তবে; Carbon Foot নামে একটি ক্রোম এক্সটেনশন আপনার ব্রাউজারে লাগাতে পারেন। এটা আপনাকে দেখাবে, নির্দিষ্ট কোন রুটে আপনার গাড়ি কত কার্বন ডাইঅক্সাইড ত্যাগ করছে। কতগুলো গাছ এখানকার কার্বন ডাইঅক্সাইড শোষন করার ক্ষমতা রাখে তাও দেখা যাবে।

কাস্টম ম্যাপ

গুগল ম্যাপে Label বসানো ছাড়াও যদি আপনি আরও কিছু করতে চান; তবে Scribble Maps এ গিয়ে গুগল ম্যাপ পাবেন সেখানে ড্রয়িং, লাইন,শেপ সহ নানা কিছু এড করার অপশন পাবেন। এভাবে আপনার একটি কাস্টম ম্যাপ তৈরি করতে পারবেন।

নতুন রাস্তা চেনা :

ধরুন আপনি কোনো এলাকায় নতুন তখন আপনি গুগল ম্যাপের মাধ্যমে খুব সহজেই; সেই এলাকার অলিগলি চিনে ফেলতে পারবেন। উপরে আমি এতগুলো ট্রিকস বললাম, এগুলোর ব্যবহারে যেকোন স্হান আপনি নিজে থেকে থেকে আপনার প্রয়োজন মত আবিস্কার করে নিতে পারবেন।
এখানে আমি গুগল ম্যাপ এর ২১ টি টিপস ও ট্রিকস সংক্ষিপ্ত ভাবে তুলে ধরেছি। বাংলাদেশ এ অনেক ফিচার আভেইলেবল না হওয়ায় পর্যাপ্ত ইমেজ দিতে পারিনি। আশা করি টিউন টি ভালই লেগেছে। ধন্যবাদ।


EmoticonEmoticon