Bangla Bloging Full Tutorial বাংলায় ব্লগিং পূর্ণাঙ্গ গাইড।

বর্তমানে বাংলাদেশের আনাচে কানাচে অনেক প্রতিভাবান লোক রয়েছে যারা মানে লক্ষাধিক টাকা উপর্জন করছে ব্লগিং করে। তাও আবার ঘরে বসে। এমনকি তারা ব্লগিংটাকে নিজের পেশা হিসাবে নিয়েছে। আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি বর্তমানে কেও যদি ব্লগিংটাকে পেশাহিসাবে নিয়ে তার লক্ষ অনুযায়ী এগিয়ে যায় তারা অবশ্যই সফল হবে। আমার অনেকেই আছে যারা আগ্রহী কিন্তু কোন গাইডলাইন পাচ্ছে না। এমনকি অনেকেই গুগল, ও ইউটিউব হন্য হয়ে খোজছে কিভাবে ব্লগিং শুরু করবে, আবার অনেকেই আছে সিডি, ডিভিডি ক্রয় করেছে শিখার জন্য, আমার এই টিউটরিয়াল তাদের জন্য । বাংলায় এই প্রথম  পূর্ণাঙ্গ  ব্লগিং গাইড।

ব্লগিং কি ?

ব্লগি হলো ভার্চুয়াল বা ইন্টারনেট এ নিজের ব্যবসা, সার্ভিস বা কোন পন্য প্রমোট করার উপযুক্ত মাধ্যম। বা কোন ইরফর্মেশন পাঠক এর কাছে পৌছে দেয়ার মাধ্যম। ব্লগ ও ওয়েবসাইট এর মধ্যে আর্থিক কোন পার্থক্য নেই তবে যে ওয়েবসাই রেগুলার কোন তথ্য আপডেট করা হয় বা নতুন নতুন তথ্য তুলে ধরা হয় তাকে ব্লগ বলে আর আর যেটি কোন ব্যবসা বা প্রতিষ্ঠান এর তথ্য  ধারন করা হয় সেটাকে আমরা ওয়েবসাই হিসাবে গননা করি। যেমন “প্রথম আলো” একটি ব্লগ আমার আন্য দিকে “জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এর ওয়েব সাইট” হলো ওয়েবসাইট। ব্লগ সম্পর্কে বিস্তারিত দেখুন………..

ব্লগ এর প্রকার ভেদঃ

আমরা যদি ব্লগকে বিভক্ত করে দেখি তাহলে ব্লগ হলঃ- ১. ব্যাক্তিগত ব্লগ। ২. সামাজিক ব্লগ। ৩. ব্যবসায়িক ব্লগ। ৪. প্রশ্ন উত্তর বিষয়ক  ব্লগ। ৫. খবর বা নিউজপেপার ব্লগ:  ব্লগএর প্রকারভেদ সম্পর্কে  বিস্তারিত দেখুন এখানে ………………

এবার আসি মূল আলোচনায়ঃ আমরা কিভাবে অতি সহজেই নিজের একটি ব্লগ বানাব এবং ব্লগ থেকে উপার্জন করা করতে পরবো। আশা করি নিচের এই ষ্টেপগুলো যদি কেউ পূর্ণাঙ্গভাবে অধ্যয়ন করে ও সেই মোতাবেক কাজ করে সে অবশ্যই সেখান থেকে ভালো পরিমানে উপার্জন করতে পারবে গ্যারান্টি। এবার আমরা দেখব কিভাবে একটা ব্লগ তৈরি করব ও সেখান থেকে উপার্জন করব।

আর এই টিউটরিয়াল টি এমন ভাবে সাজানো হয়েছে যে একজন নতুন (নিউবাই) লোক থেকে শুরু করে প্রফেশনাল পর্যন্ত সকল ষ্টেপ আলোচনা করা হয়েছে। তো চলুন শুরু করা যাক………..

কিভাবে একটি ব্লগ শুরু করবেন?

৮ স্টেপ  এ একটি পূর্ণাঙ্গ ব্লগ । এখানে ব্লগের যাবতীয় খুটিনাটি সহ সকল প্রয়োজনীয় বিষয়বস্তু তুলে ধরা হবে। আর এখানের প্রত্যেকটা ষ্টেপ খোবই গুরুত্বপূর্ণ। একটি স্ট্যাপ এর সাথে অন্যটি গভীর ভাবে যোগাযোগ রয়েছে । সুতরাং কোন একটা ষ্টেপ বাদ দেয়া যাবে না।

১। যেভাবে ওয়েব সাইট এর নিশ (ক্যাটাগরী) নির্বাচন করবেন।

একটি ব্লগ শুরু করার আগে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ব্লগের বিষয় নির্ধারণ করা । এটা নিয়ে অনেকেই অনেক সময় লাগিয়ে ফেলে আবার অনেকেই হুটহাট করে ব্লগ এর বিষয় নির্ধারণ করে ফেলে। আমি মনে করি একটি ব্লগ শুরু করার আগে অবশ্যই ভাবা উচিৎ আপনি যে বিষয়ে ব্লগিং শুরু করতে চচ্ছেন সে বিষয়টি কি আদৌ মানুষ পছন্দ করবে নাকি করবে না। একটি ব্লগ তৈরি করা আগে যে বিষয়গুলির উপর গুরুত্ব দেয়া উচিৎ।

ক) রিডার এর চাহিদাঃ
আপনি যে বিষয়টি নিয়ে ব্লগিং শুরু করতে চাচ্ছেন তা মানুষের চাহিদা আছে কিনা। মনে করুন আপনি এমন একটি বিষয় পছন্দ করলেন যা মানুষের কোন দরকার নেই। তাহলে আপনার ব্লগ এর কোন ভ্যালু থাকবে না। সব সময় এমন কিছু আপনার ব্লগে রাখতে হবে যেটি  পাঠকরা চায়।

খ) আপনার দক্ষতাঃ
দ্বিতিয়ত দেখতে হবে আপনি এমন একটি নিশ পছন্দ করেছে যা রিডাররা খোবই পছন্দ করে কিন্তু আপনি সেই বিষয়ে কিছুই জানেন না তাহলে এমন বিষয় পছন্দ করে কোনই লাভ হবে না। যেমন মনে করুন আপনি নৌকায় উঠতে খোবই ভালবাসেন তাই একটি নৌকা আর বৈঠা নিয়ে নদিতে নেমে পড়লেন । নৌকা ছাড়ার পর দেখলেন আপনি নৌকা চালাতে পারেন না।তখন বলুন আপনার অবস্থা কি হবে। ঠিক এমনই আপনি যে বিষয় খোব ভাল বুঝেন ভাল ক্রিয়েটিভিটি আছে সেই বিষয় নির্ধারন করুন ব্লগিং এর জন্য।

গ) প্রতিযোগিতাঃ
একটি ব্লগ এর মূল জিনিস হল আপনার কম্পিটিটর এনালাইসিসি করা। যখন আপনি একটি ব্লগ এর পরিকল্পনা করেন তখন আপনার অবশ্যই দেখতে হবে আপনি যে বিষয় নিয়ে ব্লগিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সে বিষয়ে অনেকে সার্চ ইঞ্জিন এর প্রথম পেজে স্থান দখল করে আছে। তখন সেই ব্লগ পেজ গুলো এনালইসিস করে বের করতে হবে তারা আসলে কি কি কারনে প্রথমে আছে, অতপর তাদের থেকে ভাল কন্টেন্ট, ভ্যালো, ব্যাকলিংক, ইমেজ, ভিডিও এড করে তাদের উপরে আসতে পারলেই পাঠক আপনার ব্লগে আসবে। কিভাবে কম্পিটিটর এনালাইসিস করবেন?এখানে আলোচনা করা হয়েছে।

ঘ) ভবিষ্যাত এর পরিকল্পনাঃ
একটি ব্লগ শুরু করার আগে অবশ্যই ভবিষ্যত পরিকল্পনা করে নিতে হবে যে আপনি যে বিষয় নিয়ে ব্লগিং শুরু করতে চাচ্ছেন সেটা কত দিন লোকে খোজবে। যেমন আপনি ব্লগ ডিজাইন করলেন “আই.পি. এল 2019 ” তখন আই. পি. এল চলাকালিন সময়ে প্রচুর ভিজিটর আসবে আপনার ভাল পরিমানে ইনকামও হবে। কিন্তু যখন আই. পি. এল শেষ হয়ে যাবে তখন আপনার ভিজিটর আস্তে আস্তে কমে যাবে। এমনকি এক সময় শুন্য কোটায় এসে দাড়াবে। এমন কিছু টপিক আছে যা বছরের কিছু সময় প্রচুর সার্চ হয় আবার পরবর্তীতে সেটা শেষ হয়ে যা এমন টপিক নিয়ে ব্লগিং করাকে ইভেন্ট ব্লগিং বলে। আবার আপনি এমন একটি নিস বা টপিক পছন্দ করলেন যা সারা বছর কিছু না কিছু সার্চ হয় এমনটি পরবর্তী ১০ বছর পরও এমন টপিক সার্চ হবে।যেমন, স্বাস্থ, অনলাইনে আয়, বাচ্চাদের পরিচ্চর্যা, এমনকি ব্যবসা প্লান ইত্যাদি ইত্যাদি। এখানে দেখুন যেভাবে একটি ব্লগ এর বিষয় পছন্দ করবেন।

 ২। যেভাবে ডোমেইন নাম রেজিস্ট্রেশন করবেন।

ডমেইন নির্বাচনের ক্ষেত্রে আপনার যে বিষয়গুলি অবষ্যই খেয়াল রাখতে হবে, তা সংক্ষেপে আলোচনা করছি।

ক। এক্সটেনশন পছন্দ করাঃ
ডমেইন রেজিষ্ট্রেশন করার ক্ষেত্রে অনেকেই দিধার ভিতর পরে যায় কি এক্সটেনশন নিবে (.com, .net, .org, .info, নাকি .us, .me) আপনার পছন্দ অনুযায়ী নিতে পারেন। এস. ই.ও করার ক্ষেত্রে বা র‌্যাংক এর ক্ষেত্রে এক্সটেনশন কোন সমস্যা নয়। আপনার সাইটে কিরকম ইসফরমেশন আছে সেটাই বড় কথা। তবে আমাদের দেশে (.com, .net, .org, .info) বেশি স্ট্যান্ডার লাগে। মনে করুন আপনি একটি ব্লগ বানাবেন “Beautifulpicnicspot” সম্পর্কে আপনার মত আরও বিষ জন এই টপিক নিয়ে কাজ করবে সেক্ষেত্রে (.com, .net, .org, .info)একটি এক্সটেনশন একজনই নিতে পারবে। তবে কি যারা (.com, .net, .org, .info) রেজিষ্ট্রেশন করতে না পারবে তার ব্লগ র‌্যাংক হবে না। ১০০% হবে। কেননা ৯০ভাগ ভিজিটর টাইটেল ও মেটা ডিসক্রিপশন দেখেই সাইটে প্রবেম করে।

খ) সাইট রিলেটেড:
আপনার সাইট যে বিষয়ের উপর সেই বিষয়ের উপর কোন কিওয়ার্ড ডমেইন এ রাখুন। তাহলে ভিজিটর এর বুঝতে সহজ হবে যে আপনি কি বিষয়ের উপর লিখছেন। মনে করুন আপনি চাকরির বিজ্ঞাপন বা পরীক্ষার রেজাল্ট বিষয়ে ব্লগিং করবেন। আপনি যদি (banglahotnews.com) নেন তাহলে মানাবে না আর যদি(jonsnews, jobsinfo, educationinfo) ইত্যাদি ইত্যাদি নেন তবে সাইট এর সাথে সামঞ্জস্য থাকবে।

গ) সহজ ও ছোট শব্দঃ
ডমেইন নেয়ার ক্ষেত্রে সহজ ও শব্দ ও ভাষা ব্যাবহার করা উচিৎ যা মানুষের লিখতে, টাইপ করতে, পড়তে ও মনে রাখতে সহজ হয়। যখন আপনার সাইটে ভিজিটর ভাল কোন ইনফরমেশন পাবে তখন তারা আপনার সাইটা মনে রাখার চেষ্টা করবে তাই যাতে সহজে মনে রাখা যায় এমন ডমেইন রেজিষ্ট্রেশন করুন। মনে করুনঃ আপনার সাইট T-Shirt Design সম্পর্কে আপনি ডমেইন নিলেন (firmdesignshirt.com) এটা মনে রাখা কঠিন হবে। আর যদি (tshirtdesignfirm.com)নেন তবে মনে রাখা সহজ হবে।

ঘ) সংখ্যা ও বিরাম চিহ্ন এর ব্যবহারঃ
ডমেইন এর ক্ষেত্রে সংখ্যা, বিরাম চিহ্ন ব্যাবহার না করাই ভাল। যেমন, (jobs247, 24information, jobs-circular) ইত্যাদি।

ঙ) তারিখ ও সন এর ব্যবহারঃ
ডমেইন নেয়ার ক্ষেত্রে তারিখ বা সন না নেয়াই ভাল্। যেমন (bloggintips2019, tips2019) ইত্যাদি। তবে ইভেন্ট ব্লগিং এর ক্ষেত্রে নিলে ভাল দেখায় কেননা ইভেন্ট এর শেষে সেই সাইট এর আর কোন প্রয়োজন হয় না। যেমন, (happynewyear2019.com, Valentineday2019.net) ইত্যাদি।

চ) সোসিয়াল মিডিয়া লিংকঃ
আমাদের চেষ্টা করা উচিৎ যে ডমেইন নাম টা নিচ্ছি সেটা সোসিয়াল লিংক (ফেইসবুক, টুইটার, পিন্টারেস্ট) সচারাচর আছে কিনা। যেমন আপনার ডমেইন (jobsinfo) সেত্রে (fb.com/jobsinfo) খালি আছে কিনা।

ছ) ট্রেডমার্ক ও বিভ্রান্তিযুক্ত ডমেইন ত্যাগ করুনঃ
ট্রেডমার্ক ডমেইন রেজিষ্ট্রেশন করা উচিৎ নয় যা অন্য কোন ট্রেডমার্ক কোম্পানীর সাথে মিলে যায়। তাতে ভিজিটর বিভ্রান্তির মাঝে পরে যাবে। যেমন (facebookmarketing, whatsapptips) ইত্যাদি কেননা (facebook ও whatsapp)এই দুইটা প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট ।

৩।ব্লগের জন্য কোন প্লাটফর্ম  নির্বাচন করবেন (ব্লগার নাকি ওয়ার্ডপ্রেস)।

আপনি যখন নিজের কোন ওয়েবসাইট তৈরির কথা ভাবছেন বিশেষ করে ব্লগ ; তখন আপনার মনে একটি জিজ্ঞাসা নিশ্চয়ই আসে যে , ব্লগার দিয়ে বানাব? নাকি ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে? আর যেহেতু ইতিমধ্যে টেকহাবসে ওয়ার্ডপ্রেস নিয়ে বেশ কিছু আর্টিকেল এবং টিউটোরিয়াল রয়েছে ; সেহেতু আমার উচিত এই বহু জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন নিয়ে একটু বিস্তারিত লেখা। আপনি হয়ত অনলাইনে ব্লগিং বা লেখালেখি নিয়ে ভাবছেন, তবে আপনার জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে আপনি আসলে কোন প্ল্যাটফর্মটি ব্যাবহার করছেন। কেননা এই প্ল্যাটফর্মটির অপরই নির্ভর করে আপনার নিজের ব্লগ বা ওয়েবসাইট এর ডিজাইন কেমন হবে, আপনার ওয়েবসাইটে আপনি কি কি কনটেন্ট দিতে পারবেন, আপনার ওয়েবসাইটে আপনি কি কি সুবিধা পাবেন এমনকি আপনার ওয়েবসাইট থেকে উপার্জন করা কতটা সুবিধা হবে।

ব্লগার নাকি ওয়ার্ডপ্রেস ? কোনটা দিয়ে শুরু করবেন? বিস্তারিত এখানে।

৪। যেভাবে ওয়েবসাইট সেটাপ ও কাষ্টমাইজ করবেন।

সিএম এস নিশ্চিত করার পর আপনি ওয়েবসাইট সেটাপ করার জন্য প্রস্তুত। যেহেতু নতুনদের জন্য আমার এই টিউটরিয়াল তাই বর্তমানে জনপ্রিয় সি.এম.এস গুলোর মধ্য থেকে ওয়ার্ডপ্রেস ও ব্লগার সেটাপ ষ্টেপ বাই স্টেপ দেখাব।


৫। ভাল মানের আর্টিকেল বা ব্লগ পোস্ট 

আর্টিকেল বা ব্লগ পোষ্ট হল বিভিন্ন টপিকের উপর লিখিত কন্টেন্ট। আপনার ওয়েবসাইট থেকে ভালো আয় করতে হলে আপনাকে বেশি বেশি আর্টিকেল ও ব্লগপোস্ট লিখতে হবে।

SEO মেইনটেইন করতে হয় গুগল ও অন্যন্য সার্চ এঞ্জিনে আপনার আর্টিকেলগুলো রাঙ্ক করানোর জন্য। আর্টিকেল গুগলের প্রথম পেইজে রাঙ্ক করানো মানে আপনি আপনার অনেক অডিয়েন্স সার্চ এর মাধ্যমেই পেতে পারেন। আর এই সার্চ করে ওয়েবসাইটে আসা ভিজিটরগুলো খুবই কাজের হয় কারণ তারা একটি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য নিয়েই আপনার সাইটে প্রবেশ করেছে।ধরুন কেউ একজোড়া জুতা কিনবে এবং সে তা কিনতে একটি জুতার দোকানে গেলো। এক্ষেত্রে তার জুতা কেনার সম্ভাবনা অনেক।

একটি ওয়েবসাইটের জন্য কনটেন্ট তৈরি করার ক্ষেত্রে প্রথমেই যে জিনিসটি খেয়াল রাখতে হবে সেটি হল আপনার ওয়েবসাইটের বিষয়।

তো আমি আগেই বলেছি যে  একটি ওয়েব সাইট এর বিষয় নির্বাচন কারা খুবই জরুরী। কখনোই আপনার ওয়েবসাইটের টপিকের বাইরের কোনো কনটেন্ট তৈরি করা ঠিক না। এর কারণে যে তখন আপনার অডিয়েন্স কিছুটা বিভ্রান্ত হতে পারে।

ধারাবাহিকভাবে আর্টিকেল বা ব্লগপোষ্ট করার নিয়ম:

নিচের পর্যায়গুলো একে একে ভালো করে অনুসরণ করুন তাহলে আপনি খুব সুন্দর একটি আর্টিকেল বা ব্লগপোস্ট লিখতে পারবেন:

ব্লগ এর বিষয় নির্বাচন:

প্রথমেই আপনার ওয়েবসাইটের বিষয় এর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কিওয়ার্ডগুলো রিসার্চ করে বের করে আনতে হবে। এরপর তা একটি ডকুমেন্টে সেভ রাখতে হবে। এটা করতে হবে এই কারণে যাতে করে আপনি নিয়মিত বিভিন্ন নিশ রিলেটেড কিওয়ার্ড এর উপর কনটেন্ট তৈরি করতে পারেন।

রির্সাচ: 

আপনি যে বিষয়ের লিখবেন অবশ্যাই সেই বিষয়ে আপনাকে রিসার্চ করতে হবে। গুগল, ইউটিউব বা অন্যন্য জায়গা থেকে একাধিক রিসার্চ করে তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। তারপর তা নিজের ভাষায় সুন্দর ও সহজলভ্য ভাষায় উপস্থাপন করতে হবে।

 হেডলাইন এর ব্যবহার:

ব্লগে লেখার সময় অবশ্যই হিডলাইন এর ব্যবহার করতে হবে। বিষেশ করে (H2, H3) এর ব্যবহার । আবার খেয়াল রাখতে হবে যাতে হিডিং স্টাফিং না হয়।

গ্রামার ও শুদ্ধ বানান:

ব্লগ রাইটিং এর ক্ষেত্রে গ্রামার ও শুদ্ধ বানান খুবই গুরুত্বপূর্ণ । কেনানা গ্রামার ও বানান অশুদ্ধ থাকলে আপনার রিডার আস্থা হাড়িয়ে ফেলবে। আপনার উপর হতে তার আস্থা হাড়িয়ে ফেলবে । তাই একটি পোস্ট বা আর্টিকেল প্রকাশ করার পূর্বে অবশ্যই রিভিশন করতে হবে।

ভিজিটরদের আকর্ষন:


  • ইমেজ ও ভিডিও অপটিমাইজড
  • মোটিভেশনাল সমাপনী।
  • থাম্বনেইল ইমেজ ব্যবহার
  • ক্যাটাগরি সিলেক্ট
  • ট্যাগ এর ব্যবহার
  • টেবিল কন্টেন্ট এর ব্যবহার


৬। ওয়েবসাইটে ভিজিটর বাড়ানোর উপায়

ওয়েবসাইট তৈরির পর আমরা প্রথমেই যে জিনিসটার উপর গুরুত্ব দেই তা হলো ভিজটর। ভিজিটর ই মূলত একটি ওয়েবসাইটের প্রান। এখন আমরা ওয়েবসাইটে ভিজিটর বাড়ানো এবং ভিজিটর ধরে রাখার কয়েকটি অব্যার্থ উপায় সম্পর্কে আলোচনা করব। প্রথমে আমাদের জনতে হবে , সাইটে ভিজিটর কিভাবে নিয়ে আসা যায়।

প্রাথমিক অবস্থায় আমরা ভিজিটর আনার জন্য কয়েকটি মাধ্যম এপ্লাই করব।

যেমন:

১। সোসাল মিডিয়া। ২। সার্চ ইঞ্জিন। ৩।ফোরাম পোষ্টিং/ প্রশ্নউত্তর সাইট। ৪।ভিডিও মার্কেটিং ও ৫। ব্লগ কমেন্টিং।

ক) সোশ্যাল মিডিয়া

একটি ওয়েবসাইট যখন নতুন তখন সে ওয়েবসাইট সম্পর্কে কেউ জানে না। তাই আপনার ওয়েবসাইটের টার্গেট ভিজিটরদের কাছে পৌছানোর সব থেকে সহজ এবং কার্যকরী উপায় হতে পারে সোশ্যাল মিডিয়া।

এক্ষেত্রে আপনি যদি ফেসবুক, ইউটিউব, ইন্সটাগ্রাম, টুইটার, স্নাপচ্যাট, রেডিট সম্পর্কে ভালো ধারনা রাখেন তাহলে খুব সহজেই আপনি আপনার ওয়েবসাইটের জন্য এইসব সোশ্যাল মিডিয়া সাইট থেকে ভিজিটর কে আপনার ওয়েবসাইটে নিতে পারেন।

বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে সোশ্যাল মিডিয়া ছাড়া কোনো ওয়েবসাইটই খুব ভালো পজিশনে যেতে পারে না। একজন টিনেজার দিনের মধ্যে ৯ ঘন্টা সময় সোশ্যাল মিডিয়াতে ব্যায় করে। যেখানে একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ দিনে ইউটিউবে ৪০মিনিট, ফেসবুকে ৩৫ মিনিট, স্নাপচ্যাটে ২৫মিনিট, ইন্সটাগ্রামে ১৫ মিনিট এবং টুইটারে ১ মিনিট সময় ব্যায় করে। এ থেকে বুঝে নেয়া যেতে পরে সোশ্যাল মিডিয়াগুলো ওয়েবসাইটের ভিজিটর বাড়ানোর জন্য কতোটা গুরুত্বপূর্ন।

খ) সার্চ  ইঞ্জির (google, yagoo, bing) ইত্যাদি

নতুন কিংবা পুরনো যেকোনো ধরনের ওয়েবসাইটেই ভিজিটর বাড়ানোর অন্যতম প্রধান একটি উপায় হতে পারে সার্চ ইন্জিন অপটিমাইজেশন (SEO)। সার্চ ইঞ্জিন গুলোতে আমরা বিভিন্ন কী-ওয়ার্ড লিখে সার্চ করি, সার্চ রেজাল্টে প্রথমে যে ওয়েবসাইট গুলো আসে সেখান থেকে প্রথম ২-৩ টা ওয়েবসাইট ই আমরা সাধারনত ভিজিট করে থাকি।

সার্চ ইন্জিন অপটিমাইজেশন (SEO) এর মূল কাজই হলো ওয়েবসাইটকে সার্চ রেজাল্টের উপরে তুলে আনা। তবে সার্চ ইন্জিন অপটিমাইজেশন (SEO) এর ব্যাপ্তি অনেক বড়, এটি শুরু করার আগে অনপেজ, অফপেজ, টাইটেল এবং ইমেজ অপটিাইজেশন, কীওয়ার্ড রিসার্চ, ব্যাকলিংক এই ব্যাপার গুলো সম্পর্কে পরিপূর্ন ধারনা থাকা প্রয়োজন।

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO) এখান থেকে শিখুন

গ) ফোরম পোষ্টিং / প্রশ্ন-উত্তর সাইট
ওয়েবসাইটে ভিজিটর আনার অরেকটি চমৎকার উপায় হলো ফোরাম পোষ্টিং এবং প্রশ্ন-উত্তর সাইট। ফোরাম এবং প্রশ্ন-উত্তর সাইটগুলোতে মানুষ বিভিন্ন ব্যাপারে জানতে চেয়ে পোষ্ট করে। সেখানে ভিজিটর যে বিষয়ে জানতে চায় সে সম্পর্কে কিছু ইনফরমেশন দিয়ে আপনার ওয়েবসাইটের লিংক দিয়ে দিলে ওই সাইট গুলো থেকে ট্রাফিক আপনার সাইটে যাবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে ফোরাম সাইট কিংবা প্রশ্ন-উত্তর সাইট গুলোতে উত্তর দেয়ার সময় সেটা যেনো সঠিক নিয়মে করা হয়। অনেক ফোরাম সাইট আছে যেগুলো অন্য ওয়েবসাইটের লিংক শেয়ার করা পছন্দ করে না। তো এসকল সাইটে কাজ শুরু করার আগেই আপনাকে এদের নিয়মগুলি ভালো ভাবে দেখে নিতে হবে।

ঘ) ভিডিও মার্কেটিং
ভিডিও মার্কেটিং হতে পারে ওয়েবসাইটে ভিজিটর আনার আরেকটি মাধ্যম। ভিডিও শেয়ারিং ওয়বেসোইট গুলোতে নিশ রিলেটেড ভিডিও পোষ্ট করে ডিসক্রিপশনে ওয়েবসাইটের লিংক শেয়ার করলে ওই ভিডিও থেকে ভিজিটরকে নিজের ওয়বেসোইটে পাঠিয়ে ওয়েবসাইটের ভিজিটর বাড়ানো যেতে পারে।

জনপ্রিয় কিছু ভিডিও শেয়ারিং সাইট নিম্নে দেয়া হলঃ

https://www.youtube.com

https://vimeo.com

http://www.ustream.tv

https://vine.co

http://www.hulu.com

ঙ) ব্লগ কমেন্টিং
ওয়েবসাইটে ভিজিটর অনার আরেকটি অণ্যতম পদ্ধতি হতে পারে ব্লগ কমেন্ট।আপনার সাইট এর নিশ রিলেটেড ব্লগ গুলো খুজে বের করে কমেন্ট অপশনে কমেন্ট করে সাইটের লিংক হাইপার লিংক করে দিতে হয়। এর ফলে সেই লিংকের মাধ্যমে ওই ব্লগের ভিজিটর রা আপনার ওয়েবসাইট ভিজিট করবে।

এটি সার্চ ইন্জিন অপটিমাইজেশন (SEO) এর ভাষায় বলা হয় ব্যাক লিংক। এর ফলে সাইটে যেমন ভিজিটর আসে তেমনি গুগল সার্চ রেজাল্টেও সাইট উপরের দিকে চলে আসে। তবে ব্লগ কমেন্ট বা ব্যাংকলিংক ক্রিয়েট করার সময় খেয়াল রাখতে হবে যে সাইট থেকে আমরা ব্যাকলিংক নিচ্ছি সেটা যেনো অবশ্যই নিশ রিলেটেড হয়। তা না হলে গুগস সেই ব্যাক লিংককে ভ্যালু দিবে না।

উপরের আলোচনার মাধ্যমে আমরা এতক্ষন ওয়বসাইটে কিভাবে ভিজিটর আনা যায় সে ব্যাপারে ধারনা পেলাম। তবে মূল কাজটা কিন্তু এখানেই শেষ না। বরং মূল কাজটা মাত্র শুরু। কারন একটা ওয়েবসাইটে শুধু ভিজিটর আনলেই হবে না। সেই ভিজিটরকে অবশ্যই ধরে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। এর বাইরে দেখাযায় অনেক ভিজিটর ওয়েবসাইট লোড হওয়ার পরপর ই ভিজিটর সাইট টি বন্ধ করে দেন। এটা যেকোনো ওয়েবসাইটের জন্য খুবই খারাপ লক্ষন। ওর ফলে ওয়েবসাইটের বাউন্স রেট বেড়ে যায়।

৭। বাউন্স রেট কি? বাউন্স রেট কেন বাড়ে?

আমরা দেখি বাউন্স রেট সব সময় % হিসেবে প্রকাশ করা হয়। বাউন্স রেট হলো এমন একটা % যেটা দ্বারা বোঝানো হয় “আপনার ওয়েসাইটে আসার পর মোট ভিজিটরের কতো % অন্য কোনো পেজ ভিজিট না করেই বন্ধ করে দিয়েছে” অর্থা যদি আপনার ওয়েবসাইটের মোট ভিজিটর যদি হয় ১০০০ জন তার মধ্যে ৬০০ জন্যই আপনার হোম পেজ লোড হওয়ার পর অণ্য কোনো পেজ ভিজিট না করেই আপনার ওয়েবসাইট টি বন্ধ করে দেয় তবে আপনার ওয়েবসাইটের বাউন্সরেট হবে ৬০%।

প্রশ্ন আসতে পারে ওয়বেসাইটের বাউন্স রেট এর স্টান্ডার্ড এমাইন্ট কতো। অনলাইন ইন্ডাস্ট্রিতে নিচের বাউন্স রেটের % কে স্টান্ডার্ড হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

বাউন্স রেট স্টান্ডার্ড

৩০% এর কম খুব ভালো

৪১% – ৫৫% ভালো

৫৬% – ৭০% ভালো নয়

৭০% এর বেশী খারাপ

এবার আমরা বুঝতে পারলাম একজন ভিজিটরকে শুধু ওয়েবসাইটে নিয়ে আসলেই হবে না। তাকে ওযেবসাইটের অন্যান্ন পেজগুলোতে নিয়ে যাওয়ার মতো কন্টেন্ট ওয়েবসাইটে রাখতে হবে।

চলুন এখন জেনে নেই ওয়েবসাইটের বাউন্স রেট কিভাবে বাড়ে। অর্থাৎ কেনো একজন ভিজিটর আপনার ওয়বেসোইট টি ভিজিট করার পর হোমপেজ থেকে অন্য কোনো পেজ ভিজিট না করেই চলে যান।

ক) চাহিদা পূরণ না হওয়া
এটা খুবই গুরুত্বপূর্ন একটা ব্যাপার যে, আপনার ধারনা থাকতে হবে একজন ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইট থেকে কি ধরনের কন্টেন্ট এক্সপেক্ট করতে পারে। অপনার অবশ্যই উচিত হবে সেই ধরনের কান্টেন্ট ই ওয়েবসইটে রাখা। ধরা যাক একজন ভিজিটর একটা বই কিনতে একটা ওয়েবসাইটে ঢুকলেন। কিন্তু তিনি যে সাইট টা ভিজিট করছেন সেটা একটি বই রিভিউ এর সাইট। এখানে ভিজিটরের এক্সপেক্টেশন ফুলফিল না হওয়ার কারনে ভিজিটর সাথে সাথে সেই ওয়েবসাইট টি বন্ধ করে দিবে।

খ) সাইট এর ডিজাইন সাদাসিধা
অনেকসময় ওয়েবসইট কে ডায়নামিক করতে গিয়ে আমরা সাইটের লুক ই চেন্জ করে দেই। এর ফলে ভিজিটর বিরক্ত হন এবং সাইট ভিজিট করা বন্ধ করে দেন।এক্সেত্রে ওয়বেসোইট বানানোর আগেই ওয়েবসাইটের কালার এবং থিম নির্বাচনের ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়া উচিত। মূলকথা সাইটের ভিজিটর ই একটা সাইটের প্রান। তাই ওয়েবসাইট বানানোর আগে ইউজার এক্সপেরিয়েন্স সম্পর্কে ভালো ধারনা থাকা প্রয়োজন।

আমরা বুঝলাম যে ওয়েবসাইটে শুধু ভিজিটর আনাই প্রধান কাজ নয় বরং তার থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ন ওয়েবসাইটের ভিজিটরকে ধরে রাখা এবং ভিজিটর যে পরবর্তীতে আবার ওয়েবসাইট টি ভিজিট করে সে ব্যবস্থা গ্রহন করা। অর্থাৎ ভিজিটরকে এনশিওর করতে হবে যে, “তুমি যে ধরনের ওয়েবসাইট বা কন্টেন্ট খুজছো তার জন্য এই ওয়েবসাইট টাই পারফেক্ট” এবার চলুন জেনে নেই ওয়েবসাইটে ভিজিটর ধরে রাখার কয়েকটি উপায়।

৮। ওয়েবসাইটে ভিজিটর ধরে রাখার উপায়

ক) ইউনিক এবং ইনফরমেটিভ কন্টেন্ট পোষ্ট করা
কন্টেন্টের ব্যাপারে একটা ব্যাপার আমরা সবাই জানি। তা হলো “Content Is King” যেকোন ধরনের ওয়েবসাইট ই হোক না কেনো কন্টেন্ট সবসময়ই গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে।কন্টেন্ট লেখা এবং সাইটে পাবলিশ করার আগে খেয়াল রাখতে লেখাটি ইউনিক এবং ইনফরমেটিভ কিনা। কন্টেন্ট ইউনিক এবং ইনফরমেটিভ হলে ভিজিটর সেই সাইটে বেশি এংগেজ থাকে।

খ) আকর্ষনীয় ছবি
ফটো / ইমেজ যেকোনো ওয়েবসাইটের ভিজিটর বাড়াতে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে থাকে।সোশ্যাল মিডিয়া এবং অন্যন্ন প্লাটফর্মে একটি সুন্দর আইক্যাচিং ফটোর সাথে ওয়েবসাইটের লিংক দেয়া থাকলে নরমাল যেকেনো সময়ের থেকে ওয়েবসাইট বেশি ভিজিটর পেয়ে থাকে।

গ) ওয়েসবাইট দ্রুত লোড নেয়া
একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে একজন ভিজিটর একটি ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য নরমালি ৩ সেকেন্ড সময় নেন। অর্থাৎ যদি ৩ সেকেন্ডের মধ্যে কোনো সাইট লোড না নেয় তবে ভিজিটর বিরক্ত হয় এবং সাইট ভিজিট করা থেকে বিরত থাকেন । তাই বোঝাই যাচ্ছে ভিজিটর বাড়ানো জন্য ওয়েবসাইট স্পিড গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে থাকে।

ঘ) রেসপন্সিভ বা ইউজার ফ্রেন্ডলি সাইট ডিজাইন
পিসি, ল্যাপটপ, ফোন, ট্যাবলেট সবকিছুর স্ক্রিন একই রকম না, রেসপন্সিভ বলতে বুঝানো হয়েছে যে সাইট গুলো পিসি, ল্যাপটপ, ফোন, ট্যাবলেট সবকিছুতেই সমান ভাবে লোড নিতে পারে এবং ডাটা রিসিভ করতে কোনো সমস্যা হয় না। ওয়েবসাইট বানানোর আগে খেয়াল করতে হবে সাইট টি রেসপন্সিভ কিনা।

ঙ) সাইটে কমেন্ট করার অপশন রাখা এবং রেগুলার রিপ্লাই দেয়া
কমেন্ট সেকশনে এংগেজ থাকলে ওয়েবসাইটের রেগুরার ভিজিটরের সংখ্যা কয়েকগুন বেড়ে যায়।এজন্য সাইটের কন্টেন্ট অপশনের কমেন্ট সেকশন টা চালু করে দিতে হবে। এর ফলে যা হবে ভিজিটর রা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন করে থাকে। এই প্রশ্নগুলোর উত্তর যখন সাইটের অথরের কাছে যায় তখন তিনি রিপলে দেন। এর ফলে কোয়েশ্চেনকারীর মেইলে একটা ইমেইল যায়। যারফলে কোয়েশ্চেনকারী অথরের রিপলে পড়ার জন্য হলেও আবার ওয়েবসাইট টি আরেকবার ভিজিট করে।

চ)  ডাটা এনালাইসিস করা
ওয়েবসাইট অথরিটিদের একটি গুরুত্বপূর্ন কাজ হলে ডাটা এনালাইসিস কর। এর থেকে বোঝা যায় কোন বয়স এবং কারা কিংবা কোন তারিখ বা সময়ে ভিজিটর বেশি থাকে। সেই অনুযায়ী ডাটা এনালাইসিস করে পরবর্তী পোষ্ট গুলোতে এটা ইমপ্লিমেন্ট করলে ভিজিটর সংখ্যা অবশ্যই বাড়বে। এর জন্য আপনি চাইলে গুগল এ্যানালাইটিকস ব্যবহার করতে পারেন।

ছ)  সোশ্যাল মিডিয়াতে একটিভ থাকা
আরেকটি গুরুত্বপূর্ন কাজ হলো বিভিন্স সোশ্যাল মিডিয়াতে একটভি থাকা। এর ফলে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে ভিজিটর আসার চান্স বেড়ে যায়।

জ)  হাইপার লিংক / ইন্টানাল লিংক বৃদ্ধি করা
যেকোনো পোষ্টে হাইপার লিংক / ইন্টারর্নাল লিংক যেকোনো একটি খুবই গুরুত্বপূর্ন।মনেকরা যাক আপনি একটা আর্টিকেল লিখছেন থাইল্যান্ড এর জনপ্রিয় যায়গা গুলো নিয়ে। কিন্তু আপনি এর আগেই থাইল্যান্ড এর স্ট্রিট ফুড নিয়েএকটি আর্টিকেল লিখেছেন। আপনি চাইলে আপনি আপনার মেইন আর্টিকেল এর সাথ স্ট্রিট ফুড এর টাইটেলটি ট্যাগ করে দিতে পারেন। এরফলে যা হবে মেইন কন্টেন্ট এর জন্য আপনি তো ভিজিটর পাচ্ছেন ই এর পাশাপাশি ইন্টার্নাল লিংক করা পেজটি ভিজিট করার একটা চান্স থাকবে।

আশাকরি কিভাবে ওয়েবসাইটের ভিজিটর বাড়ানো এবং কিভাবে সেই ভিজিটরে ধরে রাখা যায় সে ব্যাপার গুরুত্বপূর্ন কিছু ধারনা পেয়ছেন।

৯। যেভাবে সহজেই পাবেন গুগল এডসেন্স (Google AdSense) একাউন্ট।

যারা টুক টাক ব্লগিং করেন বা করার চেষ্টা করেছেন তাদের সবাই গুগল এডসেন্সের কথা শুনেছেন।ইউটিউব চ্যানেল, ব্লগ বা একটি নিজস্ব ওয়েবসাইট থাকলে AdSense থেকে আয় করা যায়। অনেকেই, যাদের ইউটিউব চ্যানেল বা ব্লগ আছে তারা নিজেও একটা এডসেন্স একাউন্ট পাওয়ার আশা করেন। আমি এখানে ইউটিউব চ্যানেলে এডসেন্স সম্পর্কে আলোচনা করবোনা, বলবো ব্লগে গুগল এডসেন্স সম্পর্কে। নেটে গুগল এডসেন্স লিখে সার্চ করলেই দেখতে পাবেন হরেক রকমের তথ্য! কেউবা বলেন এটি পাওয়াই প্রায় অসম্ভব ব্যাপার আবার কেউবা বলেন পেলেও রক্ষা করা কঠিন আবার অনেকেই পরামর্শ দেন এর বিকল্প খোঁজার! আবার অনেকেই হতাশ হয়ে Google AdSense এর নাম দিয়েছেন সোনার হরিণ! আমাদের দেশে সরকারি চাকুরীকে যেমন সোনার হরিণ বলা হয় আরকি!

সত্যি কথা বলতে কি আমার নিজেরও প্রথমে এরকমই ধারণা ছিলো নেট থেকে পাওয়া তথ্যের উপর ভিত্তি করে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ঘুরে ফিরে সকল ব্লগাররাই স্বীকার করে Google AdSense ই সবদিক থেকে সুবিধাজনক এবং ভালো ও বিশ্বস্ত!

এখানে আজে বাজে কোন বলার সুযোগ নেই। সম্পূর্ণ আমার অভিজ্ঞতা ও আমার রিসার্চ এর আলোকে আলোচনা করছি। এবার আসল কথায় আসা যাক।

গুগল এডসেন্স কি? কিভাবে এডসেন্স থেকে আয় করা যায়?

গুগল এডসেন্স হলো গুগলের এড নেটওয়ার্ক প্রোগ্রাম। Google Ads যার পূর্বনাম Google Adwords এর মাধ্যমে গুগল বিভিন্ন কোম্পানির কাছ থেকে যেসব বিজ্ঞাপন পায় তা AdSense এর মাধ্যমে পাবলিশারদের দিয়ে থাকে। Publisher গণ তাদের ওয়েবসাইটে উক্ত বিজ্ঞাপণগুলো প্রচার করলে এ থেকে গুগলের যা আয় হয় তার ৬৮% তারা পাবলিশারদের দিয়ে থাকে। ওয়েবসাইট ছাড়াও বিজ্ঞাপনগুলী ইউটিউব চ্যানেল এবং মোবাইল এপসেও প্রদর্শন করা যায় তবে এজন্য ভিন্ন ভিন্ন শর্ত এবং নিয়মাবলী প্রযোজ্য।আমরা যারা ব্লগে এড ব্যবহার করব আমরা সবাই পাবলিশার।

বাংলা কনটেন্টে কি AdSense পাওয়া যায়?
জ্বী  বর্তমানে বাংলা কন্টেন্ট এ গুলগ এডসেন্স সাপর্ট করে। আর এটি 2018 সালেই অনুমোদন দিয়েছ।এমনকি ব্লগার এর ফ্রি ব্লগে অর্থাৎ blogspot subdomain ব্লগেও খুব সহজেই এডসেন্স পাওয়া যায়। একে বলে হোস্টেড এডসেন্স (Hosted AdSense)। এমন বাধ্যবাধকতা নেই যে আগে কোনো টপ লেভেল ডোমেইন (.com .net .org .info) নিয়েই শুরু করতে হবে! অনেকেই ব্লগার এর সাব ডোমেইন তথা blogspot.com এ ব্লগিং করে এডসেন্স দিয়ে আয় করছে।তবে টপ লেভেল।

আর বাংলা লেখায় গুগল এড দেয় এটা এখন পুরনো খবর। গত ২৬শে সেপ্টেম্বর ২০১৭ থেকে গুগল এডসেন্স বাংলা ভাষার ওয়েবসাইটে এড দেয়া শুরু করেছে।পড়ুন : কিভাবে আপনার হোস্টেড এডসেন্স আপগ্রেড করে নন হোস্টেড এডসেন্স করবেন।

কিভাবে এডসেন্স একাউন্ট পাওয়ার জন্য এপ্লিকেশন করতে হয়?
গুগল এডসেন্স একাউন্টের জন্য আবেদন করার আগে অবশ্যই আগে যাচাই করে নিতে হবে আপনার ওয়েবসাইটটি এডসেন্স পাওয়ার জন্য Eligible কিনা।যদি নিশ্চিত হন আপনার ওয়েবসাইটি গুগল এডসেন্সের Program policy এবং Terms and Conditions সম্পূর্ণরূপে অনুসরণ করার উপযুক্ত তাহলে এই Form টি পূরন করে sign up করুন।

তবে যদি ব্লগার ব্লগে(Blogger blog) হোস্টেড(Hosted) একাউন্টের জন্য আবেদন করতে চান তাহলে এই ফরমের মাধ্যমে আবেদন করার প্রয়োজন নেই। সেক্ষেত্রে আপনার ব্লগার ব্লগ থেকেই আবেদন করতে পারবেন।

এপ্লিকেশন করার আগে ব্লগের বয়স কতোদিন হতে হবে?
এইটা নিয়েই অনেকে বিভ্রান্তি ছড়ায়! কেউ বলে ব্লগের বয়স কমপক্ষে ছয়মাস হতে হবে আবার কেউ বলে ছয়মাস হওয়ার প্রয়োজন নেই! ভালো লেখা হলে তিন চার মাসেই এডসেন্স পাওয়া যায়! তাহলে কার কথা বিশ্বাস করবেন? এক্ষেত্রে আমি বলবো আমার নিজের অভিজ্ঞতার কথা! আমি আমার ১৫ দিন বয়সের ব্লগেও এডসেন্স এপ্লিকেশন করে এপ্রুভ পেয়েছি। তবে হোস্টেড এডসেন্স এর ক্ষেত্রে ব্লগ এর বয়স একটু বেশি হলে ভাল।

দেখুন গুগল নিজেই কি বলে এ বিষয়ে:

Has your site been active for at least six months?
In some locations, we may require your site to have been active for at least six months before it will be considered. We’ve taken this step to ensure the quality of our advertising network and protect the interests of our advertisers and existing publishers.

এপ্লিকেশন করার আগে ব্লগে মোট কতোটি পোস্ট থাকতে হবে?
এটি নিয়েও আপনি অনেক বিভ্রান্তি দেখতে পাবেন গুগলে সার্চ করলে! কেউ বলে ২৫/৩০ কেউ বলে ৫০+ আবার কেউবা বলে ১০০+! এক্ষেত্রে আমার অভিজ্ঞতা হলো: আমার ১০ টি পোষ্ট দিয়েও এডসেন্স এর এপ্রুভাল পেয়েছি। কাজেই নতুনদের ঘাবড়ানোর কারণ নেই। ২০- ২৫ টা পোস্ট লেখার পরই এপ্লাই করুন।আমার ব্লগার ইতিহাসে কোন ব্লগ দিয়ে দ্বিতীয়বার এপ্লাই করতে হয়নি ১ম বারেই এপ্রুভাল পেয়েছি।যদি কোন কারনে আপনার ব্লগ এর জ্ন্য এডসেন্স এপ্রুভ না হয় ভয়ের কারন নেই।কি কারনে অনুমোদন হয়নি তা মেইলে বিস্তারিত লেখা থাকবে। সেই বিষয়গুলি সমাধান করার পর পুন:রায় আবেদন করুন। তবে লেখা যেনো অবশ্যই ইউনিক হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

পোষ্ট কমপক্ষে কতো শব্দের হতে হবে?
কেউ বলে ৫০০ আবার কেউ বলে ১০০০ শব্দের হতে হবে! গুগলের ভাষ্য মতে ৩০০+ শব্দের পোষ্ট মান সম্যত যদি আপনার পোষ্ট ৩০০ শব্দের কম হয় তবে আমার মতে কয়েকটা পোষ্ট আবেদন করার আগে বেশ কিছু ১০০০+ শব্দের আর্টিকেল প্রকাশ করে নিন। তাতে করে ইনসাফিসিয়েন্ট কন্টেন্ট ইস্যু থাকবে না। অনেকেই এই সমস্যার সম্মুখিন হয়। তবে লেখার মান যত ভালো হবে , লেখা যতো তথ্যবহুল হবে, লেখার আকার যতো বড় হবে ততো তাড়াতাড়ি এপ্রুভ হবে। কিন্তু লেখার আকার বড় করতে গিয়ে অর্থহীন বাক্য দিয়ে Content ভরিয়ে ফেলা ঠিক হবেনা। মনে রাখতে হবে আমাদের সাইট ভিজিটরদের জন্য।

কপি পেস্ট করা যাবে কিনা?
কপি পেস্ট যে করা যাবেনা সেটা গুগল স্পস্টই বলে দিয়েছে! তবে তারমানে এই নয় যে নেট থেকে কোনো তথ্য নেয়া যাবেনা। প্রয়োজনীয় তথ্য নেট থেকে সংগ্রহ করে নিজের ভাষায় লেখা যাবে।


কোন বিষয়ের উপর লিখলে এডসেন্স দেয় না:
সেক্স, পর্ণগ্রাফি, ভায়োলেন্স, (prohibited content ) এই ধরনের পোষ্ট দেয়া যাবে না। এমনকি কোন ধর্ম, গুত্র, বংষ ও কোন গোষ্টিকে হেয় করে কোন পোষ্ট দিলে সেটা গুগল এর এডসেন্স পলিসির বাইরে । ড্রাগ বেচাকেনা, অস্ত্র বেচাকেনা বা উৎসাহ মূলক কোন কন্টেন্ট দেয়া যাবে না।

এডসেন্স কন্টেন্ট পলিসি দেখুন এখানে।

আবেদন করার সময় কি কি তথ্য থাকতে হবে?
ব্লগে Privacy policy, Contact information, Privacy policy  ইত্যাদি পেজ থাকতে হবে।গুগল এগুলো স্পষ্টভাবেই ব্যাবহার করতে বলেছে। তবে ওয়েবসাইটে বিশেষ করে Privacy policy অবশ্যই রাখতে হবে। এ বিষয়ে Google বলেছে :

Privacy
You must disclose clearly any data collection, sharing and usage that takes place on any site, app or other property as a consequence of your use of any Google advertising service. To comply with this disclosure obligation with respect to Google’s use of data, you have the option to display a prominent link to How Google uses data when you use our partners’ sites or apps

কাদের জন্য এডসেন্স নয়?

  • যারা ওয়েবসাইট নিয়ে সঠিক পরিকল্পনা করার আগেই দ্রুত টাকা রোজগার করতে চায়।
  • যাদের ধৈর্য্যের অভাব আছে ।
  • লেখালেখির প্রতি আগ্রহ কম। অন্যের লেখা কপি করার প্রবনতা আছে।
  • ওয়েবসাইটে শুধু ফেসবুক ভিজিটরের উপর নির্ভরশীল।
  • SEO এর মাধ্যমে Organic visitor আনার পরিকল্পনা নেই।
  • মনে করে একটি AdSense account পেয়ে গেলেই হাজার হাজার ডলার আসতে থাকবে।
  • প্রচুর পড়াশোনা করার আগ্রহ ও ধৈর্য্য নেই।


১০। ব্লগ থেকে উপার্জন এর সহজ উপায়

ঘরে ঘরে ইন্টারনেট আসার হাত ধরেই এসেছে ব্লগিং। নিজের মতামত, লেখা, ছবি সবকিছুই মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার সহজ উপায় ব্লগ। নিয়মিত লিখতে লিখতে তৈরি হয়ে যায় পাঠককূলও। আর হ্যাঁ এই ব্লগই হয়ে উঠতে পারে আপনার আয়ের উত্সও।

অনেকেই বলে থাকেন, বাংলাদেশে এখনও ব্লগ থেকে যথেষ্ট আয়ের সুযোগ নেই। কিন্তু এই দেশেই এমন ব্লগাররা রয়েছেন যারা তাঁদের ব্লগ থেকেই আয় করছেন লাখ লাখ টাকা। উপায় আছে হাতের কাছেই। জানতে হবে কয়েকটি সহজ পদ্ধতি, আর তাহলেই আপনার ব্লগটিই হবে আপনার ভবিষ্যতের আয়ের পথ।

ব্লগিং করে আয়ের সহজ কয়েকটি মাধ্যম।

১। বিজ্ঞাপন প্রকাশ
সবথেকে সহজ ও প্রচলিত উপায় এটি। যদি আপনি প্রথমবার আপনার ব্লগ থেকে আয়ের কথা ভাবেন তাহলে বেছে নিন এই উপায়টিই। সারা পৃথিবীতেই ব্লগে বিজ্ঞাপন প্রকাশ করে তা থেকে আয় একটি চালু উপায়, আর আমাদের দেশেও তা সমান জনপ্রিয়। আপনার ব্লগে বিজ্ঞাপন প্রকাশ করুন, পাঠক যদি সেই বিজ্ঞাপনে ক্লিক করেন তাহলেই মিলবে কমিশন।

আপনার ব্লগে কীভাবে এটি ব্যবহার করবেন-
প্রথমেই বেছে নিন একটি বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্ক। ব্লগার এবং বিজ্ঞাপনদাতা উভয়ের মধ্যেই সবচেয়ে জনপ্রিয় বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্কটি হল গুগলের AdSense। রয়েছে BidVertiser, Infolinks এর মতো হাজারো এড নেটওয়ার্ক।

আপনার পছন্দের নেটওয়ার্কে বিজ্ঞাপন প্রকাশক হওয়ার জন্য আবেদন করুন। অন্যান্য তথ্যের সঙ্গে আপনার ব্যাঙ্ক আকাউন্ট, যেখানে কমিশনের টাকা পাঠানো হবে তার বিবরণও দিতে হবে আবেদনপত্রে, তাই সেই বিবরণ তৈরি রাখুন।

আপনার আবেদন মঞ্জুর হলে বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্কের তরফ থেকে তা জানিয়ে আপনাকে একটি ইমেইল করা হবে। এরপর আপনাকে পাঠানো হবে বিজ্ঞাপন কোড যা আপনি আপনার ব্লগে প্রকাশ করবেন। আপনি আপনার পছন্দ মতো জায়গায় এটি প্রকাশ করতে পারেন, যেমন আপনি এটিকে লেখার মাঝে বা লেখার পাশের বারে রাখতে পারেন।

আপনি বিজ্ঞাপন কোডটি ঠিক স্থানে রাখার পর অল্প সময়ের মধ্যেই বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্কের পক্ষ থেকে তা আপনার ব্লগে প্রকাশ করা হবে এবং বিজ্ঞাপনটি আপনার ব্লগে দেখাবে।আপনার কাজ শেষ। এবার আপনার পাঠকরা ওই বিজ্ঞাপনে ক্লিক করলেই পয়সা জমা পড়বে আপনার অ্যাকাউন্টে।

কত টাকা পেতে পারেন
প্রতি ক্লিকে ০.০১ থেকে ৫০ ডলার পর্যন্ত আয় করা যেতে পারে। আপনার ব্লগের বিষয়ের ওপরই নির্ভর করে এই আয়, কারণ ব্লগের বিষয়ের ভিত্তিতেই দেওয়া হয় বিজ্ঞাপন। আপনার আয়ের পরিমাণ নির্ভর করছে কতজন বিজ্ঞাপনটি ক্লিক করছেন তার ওপর।

বেশি আয় করবেন কীভাবে- আপনার ব্লগে কোন জায়গায় বিজ্ঞাপন দিলে সবথেকে বেশি পাঠকের চোখে পড়বে ও তাঁরা তা ক্লিক করতে উত্সাহিত হবেন, সেটা খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন। ঠিক করুন বিজ্ঞাপনের ধরণও। যেমন কোনও ব্লগে ছবিসহ বিজ্ঞাপনে বেশি ক্লিক হয় আবার অন্য কোনও ব্লগে, লেখা বিজ্ঞাপনের পাঠক বেশি।

২। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

বেশ ভালরকমের আয় হতে পারে এই উপায়। ব্লগে লেখার মাধ্যমে কোনও একটি পণ্য বা পরিষেবার প্রচার করতে হবে আপনাকে। পণ্য বা পরিষেবাটি বাছার বিষয় সতর্ক হোন। আপনার পাঠকরা কী কিনতে চাইতে পারে সেটি বুঝে নিতে হবে আপনাকে। এরজন্য প্রয়োজন গবেষণা ও বিশ্লেষণ। প্রচার করার সময়ও হতে হবে সাবধানী, পাঠক আপনার লেখা পড়তে আপনার ব্লগে আসেন, সারাক্ষণ পণ্য বা পরিষেবার প্রচার দেখলে তিনি বিরক্ত হতে পারেন।

লেখার সঙ্গে পণ্য বা পরিষেবাটির লিঙ্ক আপনার ব্লগে প্রকাশ করতে হবে। যখন পাঠক সেই লিঙ্কে ক্লিক করবেন বা কিনবেন আপনি কমিশন পাবেন।

আপনার ব্লগে কীভাবে এটি ব্যবহার করবেন-
প্রথমেই বেছে নিন কোন পণ্য বা পরিষেবার মার্কেটিং করতে চান। কয়েকটি প্রচলিত অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক হল Amazon, Clickbank, OMG India, Trootrac media। এছাড়াও ফ্লিপকার্ট বা ইবে মতো কোম্পানিতে মার্কেটিং অ্যাফিলিয়েট হিসেবে সরাসরি যুক্ত হওয়ার সুযোগ রয়েছে। পছন্দের ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন পত্র পূরণ করুন। আপনি মার্কেটিং-এর জন্য কী কী কৌশল ও পদ্ধতি ঠিক করেছেন, তা জানাতে হতে পারে আবেদনের সময়।

বেশিরভাগ ওয়েবসাইটই ২৪-৭২ ঘন্টার মধ্যে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয় আপনার আবেদন গৃহীত হল কি না। আবেদন গৃহীত হলে আপনার অ্যাফিলিয়েট অ্যাকাউন্টটিতে লগ-ইন করে বেছে নিতে পারেন আপনার ব্লগের জন্য উপযুক্ত লিঙ্কটি। উপযুক্ত লিঙ্ক বা বিজ্ঞাপনটি আপনার ব্লগে যোগ করার পর দেখে নিন তা ঠিক মতো কাজ করছে কি না।

অ্যাফিলিয়েট হিসেবে আয় করার জন্য আপনি এবার প্রস্তুত। এরপর যখনই কেউ ওই লিঙ্কে ক্লিক করবে অথবা পণ্য বা পরিষেবাটি কিনবে আপনি তা থেকে কমিশন পাবেন।

কত টাকা পেতে পারেন-
বিক্রয়মূল্যের ২.৫ শতাংশ থেকে ৫০ শতাংশ অবধি পেতে পারেন আপনি। কমিশনের মূল্য নির্ভর করে পণ্য বা ওয়েবসাইটের ওপর। যেমন আপনি যদি ফ্লিপকার্টের বিজ্ঞাপন দেন, তাহলে কোনও ক্রেতা মোবাইল ফোন কিনলে আপনি যে কমিশন পাবেন, তার থেকে অনেক বেশি কমিশন পাবেন কেউ জামাকাপড় কিনলে।

বেশি আয় করবেন কীভাবে- আপনার পাঠকের কথা মাথায় রেখে পণ্য বা পরিষেবা নির্বাচন করুন। যে জিনিসের বিক্রি বেশি তার কমিশন কম, তাই পণ্য বা পরিষেবা নির্বাচনের সময় এমন জিনিস বাছুন যা তুলনামূলকভাবে কম বিক্রি হয় কিন্তু আপনার পাঠক তা কিনতে উত্সাহী।

৩। নিজের পণ্য বিক্রি

সবথেকে স্থায়ী ও নিশ্চিত আয়ের পদ্ধতি ব্লগের সাহায্যে নিজের পণ্য বিক্রি করা। এক্ষেত্রে আয়ের ওপর সবথেকে বেশি নিয়ন্ত্রণ রাখা সম্ভব। যেহেতু পণ্য ডিজাইন, দাম নির্ধারণ, মার্কেটিং পুরোটাই ব্লগার নিজে করেন তাই আয়ও তাঁর ওপরই নির্ভর করে। কীভাবে কাজ করে- নিজের দক্ষতা অনুযায়ী একটি পণ্য বা পরিষেবা তৈরি করুন। তারপর ব্লগের মাধ্যমে সেটি বিক্রি করুন।

আপনার ব্লগে কীভাবে এটি ব্যবহার করবেন-
নিজে হাতে বা কাউকে দিয়ে কোনও একটি পণ্য বা পরিষেবা তৈরি করুন। ইবুক, ভিডিওকোর্সের মত ডিজিটাল পণ্য বা বই, কুকি ইত্যাদি যা ইচ্ছে তৈরি করতে পারেন আপনি। পণ্য বা পরিষেবার মূল্য নির্ধারণ করুন। পণ্যটি কিভাবে ক্রেতার কাছে পৌঁছে দেবেন, ক্যুরিয়র বা পোস্টে না কি ক্রেতাকে নিজে এসে সংগ্রহ করতে হবে তা ঠিক করুন। ঠিক করুন বিক্রয়মূল্য সংগ্রহের পদ্ধতি, পে-প্যাল, নগদ, চেক, ব্যাঙ্কে সরাসরি টাকা পাঠানো, আপনার এবং ক্রেতার দুজনের জন্যই সবথেকে বেশি সুবিধাজনক পদ্ধতিটি বেছে নিন।

ব্লগে একটি ল্যান্ডিং পাতা যোগ করুন, সেখানে আপনার তৈরি পণ্যের বিবরণ দিন, পণ্যটির ব্যবহার, উপযোগীতা সম্পর্কে বিশদে লিখুন, যোগ করুন কেনার বোতাম। নিজের পাঠকের বাইরে অন্যদের মধ্যেও আপনার পণ্যের প্রচার করুন। ব্যবহার করুন সোশ্যাল মিডিয়া, ইমেল মার্কেটিং বা অ্যাডওয়ার্ডের মত মাধ্যমগুলি।

আপনার পণ্য বিক্রি করুন ও তা থেকে আয় করুন।

কত টাকা আয় করতে পারেন-
এর কোনও উচ্চসীমা নেই। দাম, উত্পাদনমূল্য সবই যেহেতু আপনিই ঠিক করবেন তাই আয়ও আপনার হাতে, যত ভাল পণ্য, বিক্রিও তত বেশি, আর তা থেকে আয়ও।

বেশি আয় করবেন কীভাবে- পাঠকের চাহিদা বিশ্লেষণ করুন, এমন পণ্য তৈরি করুন যা আপনার পাঠক কিনতে উৎসাহী.

৪। ব্লগে সরাসরি বিজ্ঞাপন প্রকাশ

ব্লগ থেকে টাকা রোজগারের খুবই চালু উপায় হল কোনও কোম্পানির সঙ্গে সরাসরি কথা বলে তাদের বিজ্ঞাপন ব্লগে দেওয়া। এরফলে অ্যাডনেটওয়ার্ককে বাদ দিয়েই বিজ্ঞাপন দিতে পারছেন আপনি, বাড়ছে আয়। এছাড়াও আপনিই ঠিক করছেন কোন বিজ্ঞাপন দেবেন ও তার জন্য কতটাকা ধার্য্য করবেন, ফলে নিয়ন্ত্রণ থাকছে আপনার হাতে। তবে কোনও কোনও ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি খুবই ভাল কাজ করলেও অনেকক্ষেত্রে একেবারেই কার্যকরী হয়না।

কীভাবে কাজ করে
আপনি ব্লগে বিজ্ঞাপনটি প্রকাশ করবেন, যখনই কেউ সেই বিজ্ঞাপনে ক্লিক করবে আপনি টাকা পাবেন। অথবা মাসিক বা সাপ্তাহিক মূল্যও ধার্য্য করা যেতে পারে, যেখানে পাঠকের ক্লিক করার ওপর নির্ভর করবে না আয়।

আপনার ব্লগে এটি ব্যবহার করবেন কীভাবে-
ব্লগের কোন জায়গায় বিজ্ঞাপনটি দিতে চান ঠিক করুন. হেডার, ফুটার, সাইডবার বা লেখার মধ্যে যেকোনও জায়গায় দিতে পারেন বিজ্ঞাপনটি। আপনার ব্লগে বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য কী করতে হবে সেই বিবরণ দিয়ে একটি পাতা তৈরি করুন। সেখানে লিখুন আপনার পাঠক কারা, আপনি কী বিষয় লেখেন, এবং আপনার ব্লগে বিজ্ঞাপনের মূল্য কত। ব্লগের বিভিন্ন জায়গার জন্য বিভিন্ন মূল্য নির্ধারণ করতে পারেন, যেমন হেডারে হয়তো আপনি বেশি মূল্য ঠিক করলেন আর লেখার মধ্যে কম। আপনার যোগযোগ নম্বর বা ই-মেইল আইডিও উল্লেখ করুন।

মানিটাইজেশন নেটওয়ার্ক-এ নিজের ব্লগকে নথিভুক্ত করান। এই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে আপনি অনেক বিজ্ঞাপনদাতার কাছে পৌঁছতে পারবেন। BuySell Ads এরকম একটি জনপ্রিয় নেটওয়ার্ক। ব্লগের যে জায়গায় আপনি বিজ্ঞাপন দিতে চান শেখানে বক্স করে লিখুন “এখানে বিজ্ঞাপন দিন”। এটি বিজ্ঞাপনদাতার দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। অনেক সময়ই বিজ্ঞাপনদাতা মূল্যের বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে স্থির করতে চায়, সেই সুযোগ রাখুন। মূল্যের বিষয় সহমতে এলে বিজ্ঞাপন প্রকাশ করুন ও টাকা পান।

কত আয় হতে পারে-
আপনিই যেহেতু মূল্য নির্ধারণ করবেন তাই আপনার ওপরই নির্ভর করছে আয়ের পরিমাণ। তবে যত বেশি সংখ্যক পাঠক আয়ও ততই বেশি। বেশি আয় করবেন কী ভাবে- ব্লগের যে যে জায়গায় বিজ্ঞাপন দেবেন প্রতি জায়গাতেই “এখানে বিজ্ঞাপন দিন” লিখবেন না। আমার মতে কোনও কোনও জায়গায় কিছু নকল বিজ্ঞাপন দিন, এতে বিজ্ঞাপনদাতার আপনার ব্লগে বিজ্ঞাপন দিতে উৎসাহী হবেন।

এই উপায়গুলোই হল ব্লগ থেকে আয়ের সবথেকে প্রচলিত উপায়। ব্লগ থেকে রোজগার করা যেমন কোনও রকেট সায়েন্স নয় তেমনই ছেলেখেলাও নয়। পণ্য বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে খুবই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। এবং ব্লগের নিয়মিত পাঠক তৈরি করার জন্য পরিশ্রম করতে হবে, যত বেশি সংখ্যক নিয়মিত পাঠক তৈরি করতে পারবেন আয় ততই বাড়বে। প্রয়োজন ব্লগের প্রচার করাও। অনেক ব্লগারই খুব ভাল প্রবন্ধ লেখেন কিন্তু প্রচার করেন না, তাই তা তাদের ব্যক্তিগত ডায়েরির মতই রয়ে যায়। প্রচারের মাধ্যমেই একমাত্র সম্ভাব্য পাঠকের কাছে পৌঁছনো সম্ভব। তাই ব্লগের প্রচার করুন, যেকোনও একটি উপায় বেছে নিন আর আয় করুন ব্লগ থেকে।

আপনি এখন ব্লগিং শুরু করতে পারেন। প্রতিটি ষ্টেপই ভিডিও টিউটরিয়াল ও লাইভ চ্যাট এর মধ্যমে সম্পূর্ণ করতে পারবেন। আমার সাথেই থাকুন।


EmoticonEmoticon