আপনাকে Self Motivated রাখার পাঁচ (০৫) টি পরামর্শ

এখনকার দিনে জীবন অনেক কঠিন। সবকিছুতেই চাপ অনেক বেশি। আর্থিক চাপ, কাজের চাপ, পরিবারের চাপ। আপনি কিভাবে এই চাপমুক্ত থাকবেন? আপনি যদি সুখি, চাপমুক্ত এবং আপনার নিজের কাজ কে উপভোগ করতে চান, তাহলে আপনাকে কি করতে হবে? অবশ্যই আপনার মধ্যে স্ব-প্রেরনা (self-motivated) থাকতে হবে। আপনি যে কাজই করুন না কেন, আপনি সেই কাজকে উপভোগ করতে চাইলে অবশ্যই নিজেকে উৎসাহিত করতে হবে।
আমি আজকে আপনাদের কিছু পরামর্শ দিবো যা আপনাদেরকে স্ব-প্রেরণা জোগাতে সাহায্য করবে।

০১। ছোট ছোট সফলতাগুলোকে সিলেব্রেট করুন (Celebrate Little Wins):

প্রথম যেই বিষয়টি আপনাকে স্ব-প্রেরণা জোগাবে তা হলো, ছোট ছোট সফলতাগুলোকে সিলেব্রেট করা। আপনার সফলতাটি যত ছোটই হোক না কেন, এটা খুবই গুরুত্তপূর্ণ যে আপনি সেটাকে সিলেব্রেট করছেন। ধরুন আপনি একটি কাজ করলেন এবং সেটার জন্য আপনার অফিসের বস, বা আপনার কোনো সহকর্মী, অথবা আপনার পরিবারের কেউ আপনাকে এসে বললো, Wow! You Did a Great Job!  বাহঃ তুমি অনেক ভালো কাজ করেছো! এই SUCCESS টি সিলেব্রেট করুন।
যদি আপনি মনে করেন যে, আপনি সত্যিই একটা ভালো কাজ করেছেন। তাহলে আপনি অবশ্যই সেটাকে সিলেব্রেট করবেন। আর যদি আপনি এইসব ছোট সফলতা গুলো সিলেব্রেট করা বন্ধ করেন। এই ভেবে যে, আরে এটা তো অনেক ছোট সফলতা। সিলেব্রেট করতে হবে কেন? এটা কোনো ব্যপার না।
তাহলে আপনার ধারনা সম্পুর্ণ ভুল। অবশ্যই এটি একটি ব্যপার। আপনি নিজেই এর পার্থক্য টা দেখতে পাবেন। এটা আপনার মধ্যে পজিটিভ এনার্জি ক্রিয়েট করবে। আপনার বড় লক্ষ্য গুলোর দিকে মনোযোগি হতে সাহায্য করবে। এটা আপনার নিজস্ব একটা ক্ষেত্র তৈরিতে সাহায্য করবে এবং আপনি সুখি অনুভব করবেন।
তাহলে প্রথম যেই ব্যপারটি আপনাকে স্ব-প্রেরণা জোগাবে তা হলো, ছোট ছোট সফলতাগুলোকে সিলেব্রেট করা।

০২। গোপনীয়তা বজায় রাখুন (Keep Your Cards Close to You):

পরবর্তি যে বিষয়টি আপনাকে সেল্ফ মোটিভেটেড থাকতে সাহায্য করবে তা হলো, কিছু কথা নিজের মধ্যে রাখুন।
হয়তবা আপনি আপনার নতুন ডায়েট প্লান নিয়ে অনেক বেশি এক্সাইটেড অথবা আপনি কোনো একটা নতুন বড় প্রজেক্ট এ কাজ শুরু করতে যাচ্ছেন। দ্যাটস গ্রেট! এটা আপনার জন্য ভালো। আপনাকে অভিনন্দন। কিন্তু এটা গোটা দুনিয়ার সাথে শেয়ার করা বা অ্যানাউন্স করার দরকার নেই। তবে এটা আপনি আপনার পরিবার এর সদস্যদের সাথে অথবা আপনার ক্লোজ ফ্রেন্ড এর সাথে শেয়ার করতে পারেন।
ধরুন আপনি আপনার এই স্ট্যাটাস টা আপনার ফেসবুক ওয়াল এ পোস্ট করলেন। অনেক বড় একটা নিউজ। নিঃসন্দেহে আপনার ওয়াল অনেক পজিটিভ কমেন্টস এ ভরে যাবে। কিন্তু সেটা আপনার কোনো কাজে আসবেনা। কারন, আপনি যখন আপনার পরিবারের সদস্য অথবা আপনার বন্ধু অথবা আপনার সহকর্মি দের কাছ থেকে আসা সেই কমেন্টস গুলো পড়া শেষ করবেন, তখন আপনি মনে করবেন যে আপনি আপনার লক্ষ্য অলরেডি অর্জন করে ফেলেছেন। কিন্তু সত্যি বলতে তো আপনি এখনও কাজ শুরুই করেন নি। এটা আপনার মধ্যে নেগেটিভ প্রভাব ফেলবে।
সুতরাং নিজের মধ্যে গোপনীয়তা বজায় রাখুন। এই বড় নিউজ গুলো শেয়ার করা বন্ধ রাখুন। তবে আপনি একবার যখন সফলতা অর্জন করবেন, তখন সেটা শেয়ার করুন। কারন তখন সেটা আপনাকে সেল্ফ মোটিভেটেড থাকতে সাহায্য করবে।

০৩।  তুলনা করা বন্ধ করুন (Stop Comparing):

সবচেয়ে গুরুত্তপুর্ণ যে ব্যপারটি সেটি হলো, অন্যের সাথে নিজের তুলনা করা বন্ধ করুন। নিজেকে সম্মান করতে শিখুন। এটা ঠিক যে, আমরা এখন ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম এর যুগে বাস করছি। যেখানে মানুষ তাদের দৈনন্দিন কর্মকন্ড শেয়ার করছে। এবং আপনি সেটা দেখলেন আর মনে মনে ভাবলেন যে, ahh! What am I doing?  Why am I not able to achieve Success?  কিন্তু এটা ঠিক নয়। আপনি যেটা দেখেছেন সেটা সত্যি নাও হতে পারে। Because, Grass Always Green Around the Other Side.
তাই অন্যের সাথে নিজের তুলনা করা বন্ধ করুন। আপনি শুধু আপনার সফলতা অর্জনের প্রতি মনোযোগ দিন। আমি নিশ্চিত, অবশ্যই আপনি সফল হবেন।
আপনি ফেসবুক এ যে গল্প গুলো দেখছেন সেটা সত্যি নয়। বিশ্বাস করুন, ফেসবুক বা টুইটারে কেউ তাদের কঠিন সময়গুলো শেয়ার করেনা। সবাই তাদের আনন্দের মুহুর্ত গুলো শেয়ার করতে পছন্দ করে। সম্ভবত আপনিও তাই।
সুতরাং নিজেকে সম্মান করুন, সফলতা অর্জনের প্রতি মনোযোগি হোন এবং অবশ্যই অন্যের সাথে নিজের তুলনা করা বন্ধ করুন।

০৪। আপনার পছন্দের কাজটি করুন (Do What You Love To Do):

পরবর্তি যে কাজটি আপনাকে Self-Motivated থাকতে সাহায্য করবে তা হলো, আপনি যে কাজটি করতে ভালোবাসেন সেটিই করুন। আপনি যদি কোনো কাজে অনেক আগ্রহী হন এবং আপনি সেটা আপনার Career হিসেবে নিতে চান। তাহলে সে অনুযায়ী কাজ করুন। আপনি অবশ্যি সফল হবেন।
কিন্তু এখানে আপনাকে একটু সতর্ক থাকতে হবে। ধরুন, আমি গিটার বাজাতে অনেক পছন্দ করি। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আমি কখনোই একজন রকস্টার হতে পারবোনা এবং সেটার মাধ্যমে আ্মি আমার জীবনযাপন করতে পারবোনা।
তাই আপনাকে আগে নিশ্চিত হতে হবে। আপনি যদি নিশ্চিতভাবে কোনো কাজ করতে পছন্দ করেন এবং কাজটি যদি করতে একটু কঠিনও হয় এবং তারপরেও যদি আপনি সেই কাজটি করেন। তাহলে সেটা আপনাকে জীবনযাপনে সাহায্য করবে। উদাহারন-স্বরুপ, আপনি যদি সেলস পছন্দ করেন। তাহলে হয়তবা আপনি কোনো মার্কেটিং ফিল্ড এ কাজ করতে পারেন। অথবা , আপনি কোনো বড় অর্গানাইজেশন এর মার্কেটিং ডিপার্টমেন্ট এ কাজ করতে পারেন। যেটা আপনাকে অনেক বেশি টাকা উপার্জনে সাহায্য করবে। এবং অবশ্যই আপনাকে সেই কাজটি অনেক আগ্রহের সাথে চালিয়ে যেতে হবে।
তাই সবসময় মনে রাখতে হবে যে, আপনি যে কাজটি করছেন সেত্যিই আপনি সেটা ভালোবাসেন কিনা। আপনি যদি সত্যিই কোনো কাজ করতে অনেক বেশি আগ্রহী হন এবং সেই কাজটি মনোযোগ দিয়ে করেন। তাহলে আপনি অবশ্যই সফল হবেন।

০৫। আপনার কাজের তালিকা টি ছোট করুন (Slash Your To Do List):

সবশেষে যে বিষয় টি আপানাকে Self-Motivated থাকতে সাহায্য করবে সেটি হলো, আপনি আপনার কাজের তালিকাটি কে ছোট করুন। আমি যেটা বুঝাতে চাচ্ছি সেটা হলো, ধরুন আপনি একটা অনেক বড় লিস্ট করলেন। যেমনঃ ১। আমাকে সফলতার জন্য কাজ করতে হবে, ২। আমাকে ইংরেজি তে দক্ষ হতে হবে, ৩। আমাকে আমার লক্ষ্য অর্জন করতে হবে, ৪। আমাকে আমার সহকর্মিদের সাথে বন্ধুভাবাপন্ন হতে হবে, ৫। আমাকে একটা অনেক বড় প্রজেক্ট এ কাজ করতে হবে , ………… ………ইত্যাদি।
OMG! দয়া করে একটু থামুন। You Need to Stop. আপনাকে এই লিস্ট টা কেটে ছোট করতে হবে। আপনি এই লিস্ট টা কেটে অর্ধেক করুন। কারন আপনাকে বাস্তববাদী হতে হবে। তাহলে আপনার সফলতা অর্জনের একটা ক্ষেত্র তৈরি হবে।
আপনি যদি এরকম ১০ থেকে ১৫ টা পয়েন্ট লিখেন, যেগুলা আপনার করা প্রয়োজন। এবং একসাথে সব কাজ করতে চান। তাহলে আপনার কি মনে হয়, আপনি সফলতা অর্জন করতে পারবেন?? অবশ্যই নয়। আপনার হাতে দিনে মাত্র ২৪ ঘন্টা সময়। অনেক বেশি অর্জনের জন্য অনেক বেশি সময় এর প্রয়োজন।
সুতরাং বাস্তববাদী হোন। আপনার তৈরি করা লিস্ট টি কেটে অর্ধেক করে প্রথম অর্ধেক এর জন্য কাজ করুন। প্রথম অর্ধেক অর্জনের পর, দ্বিতীয় অর্ধেক এর জন্য কাজ করুন।
এভাবে কাজ করলে আপনি অবশ্যই সফল হবেন।


EmoticonEmoticon