রন্ধনশিল্পীদের চাহিদা দেশে বিদেশে এখন ব্যাপক

জাহিদা বেগম
বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল হোটেল এন্ড ট্যুরিজম ট্রেনিং ইনসটিটিউটের (এনএইচটিটিআই) ফুড এন্ড বেভারেজ প্রডাকশন বিভাগের প্রধান জাহিদা বেগম। রান্না বিষয়ে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন নেপাল এবং সাইপ্রাস থেকে। পাশাপাশি জাপানে পড়াশুনা করেছেন ইকো ট্যুরিজম বিষয়ে। দীর্ঘ সতেরো বছর সরাসরি রন্ধন শিল্পের সঙ্গে জড়িত তিনি। দেশ বিদেশে রান্নাবিষয়ক বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিচারক এবং মেন্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। জাপানে ৭৯টি দেশের মাঝে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন এবং মন্ত্রী পর্যায়ে সম্মাননা স্মারক গ্রহণ করেছেন। রন্ধনশিল্পে ক্যারিয়ারের সম্ভাবনা এবং সাফল্যের নানাদিক নিয়ে কথা বলেছেন গুণী এই রন্ধনশিল্পী। সাক্ষাতকার নিয়েছেন কর্পোরেট আস্কের সিইও ও রেজ্যুমে ডেভলাপমেন্ট স্পেশালিস্ট নিয়াজ আহমেদ
রন্ধনশিল্পে দেশে এবং দেশের বাইরের বাজারে চাকরির সম্ভাবনা কেমন?
জাহিদা বেগম: দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। রেস্তোরায় খেতে যাওয়া এখন আর বিলাসিতা নয়, অনেকটা প্রয়োজনের মতো হয়ে গেছে। স্বামী এবং স্ত্রী উভয়েই হয়তো চাকরি শেষে রাত আটটা নয়টায় বাড়ি ফিরছেন। বাসায় গিয়ে রান্নাবান্নার ঝামেলা এড়িয়ে চলতে চান অনেকেই। তবে সবাই আবার মেন্যুতে খোঁজেন স্বাস্থ্যসম্মত ও সুস্বাদু খাবার। যার কারণে দেশে এখন প্রচুর পরিমানে রেস্তোরা গড়ে উঠছে। আর রেস্টুরেন্ট ব্যবসার মূল সাফল্য নির্ভর করে রান্নার স্বাদ এবং খাবারের পুষ্টিমানের উপর যা নিশ্চিত করেন একজন দক্ষ শেফ।
আমাদের প্রতিষ্ঠান এনইএইচটিটিআই থেকে প্রত্যেক ছয়মাসে তিনশতাধিক ছাত্রছাত্রী রন্ধন শিল্পের ডিপ্লোমা বা অন্যান্য কোর্স শেষ করে চাকরির বাজারে যুক্ত হচ্ছে। দেশের ছোট হোটেলগুলোতে সর্বনিম্ন আট থেকে দশ হাজার টাকা বেতনে শেফ হিসেবে চাকরি পাওয়া সম্ভব। এছাড়াও নামীদামি তারকা হোটেলগুলোতে একজন রন্ধনশিল্পীর মাসিক বেতন পঞ্চাশ হাজার থেকে দশ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
শুধু দেশেই নয়, বিদেশেও রয়েছে রন্ধনশিল্পীদের কাজের অপার সম্ভবনা। আরব দেশগুলোতে এমন কি মালদ্বীপ, মালয়শিয়া, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুরের মতো দেশে একজন প্রফেশনাল শেফের মাসিক বেতন কমপক্ষে ষাট থেকে সত্তর হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। আর আপনি যখন দক্ষ একজন জনশক্তি হিসেবে বাইরের দেশে যাওয়ার জন্য আবেদন করবেন তখন আপনার ওয়ার্ক পারমিট এবং ভিসা সংক্রান্ত জটিলতাও অনেকাংশে কমে আসবে। পর্যটন থেকে যারা রন্ধন শিল্পের উপর ডিপ্লোমা কোর্স করছেন তাদের মধ্যে ৩০ শতাংশ লোকই ভালো জব নিয়ে দেশের বাইরে কাজ করছেন। দেশের মধ্যে যারা আছেন তারাও নিযুক্ত হচ্ছেন নামীদামি হোটেল রেস্টুরেন্টে। কেউ কেউ আবার হচ্ছেন উদ্যোক্তা। মূল কথা, রন্ধন শিল্পটাকে ভালোবাসতে হবে ও পুষ্টিগুণ বজায় রাখতে হবে। এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় স্বাস্থ্যসম্মত পদ্ধতিতে খাদ্য পরিবেশনের মাধ্যমে সহজেই ব্যবসায়িক সাফল্য আনা সম্ভব।
কেমন শিক্ষাগত যোগ্যতা এ পেশায় আসা সম্ভব?
জাহিদা বেগম: এই পেশায় আসতে চাইলে ন্যূনতম এসএসসি পাশ হতে হবে। সবার মেধা ডাক্তার কিংবা ইঞ্জিনিয়ার হবার মতো নয়। স্রষ্টা প্রত্যেককেই আলাদা আলাদা প্রতিভা দিয়ে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। কাজেই কারো ভিতরে যদি সেই স্পৃহা থাকে যে তিনি রন্ধনশিল্পে ভালো করবেন, তবে এসএসসি পাশ করে এবং নিয়মিত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সহজেই তিনি এই পেশায় আসতে পারবেন। খুব অল্প সময়ের মধ্যে এই পেশায় ভালো করা যায়। এমনকি ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার বা তথাকথিত নামিদামি পেশাজীবিদের চেয়েও বেশি বেতন পাওয়া সম্ভব ।  
এই পেশায় আসার জন্য কি কি ধরনের সহায়ক কোর্স করা যেতে পারে?
জাহিদা বেগম: রন্ধনশিল্প একটি বিশাল ক্ষেত্র। এখানে আপনি দেশি রান্না, ভারতীয় রান্না, চাইনিজ কিংবা জাপানি রান্না এমনকি ফাস্টফুড ও ডেজার্ট তৈরির উপর কোর্স করতে পারেন। প্রতিটি কোর্সে একজন শেফ এর আচার আচরণগত বিভিন্ন দিক, রান্না ঘরের খুঁটিনাটি বিষয় এবং খাবারের গুণগত মান, স্বাস্থ্যবিধি ও পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বিশদভাবে ধারণা দেয়া হয়। আমরা যেসকল কোর্স করাই সেগুলো হলো-
•    ন্যাশনাল সার্টিফিকেট কোর্স অন ফুড অ্যান্ড বেভারেজ প্রডাকশন (সাড়ে চার মাস মেয়াদী)
•    ওয়ান ইয়ার প্রফেশনাল শেফ কোর্স (এক বছর মেয়াদী)
•    ডিপ্লোমা ইন কুলিনারি আর্টস অ্যান্ড ক্যাটারিং ম্যানেজমেন্ট (এক বছর মেয়াদী- শুক্র ও শনিবার)
যারা দ্রুত কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করতে চায় তাদের জন্য প্রথম কোর্সটিই উপযুক্ত। কিন্তু যারা রন্ধনশিল্প ও ক্যাটারিং সম্পর্কে বিশদ জানতে চায় তাদের জন্য দ্বিতীয় ও তৃতীয় কোর্সগুলো প্রযোজ্য। তৃতীয় কোর্সটি মূলত কর্মজীবি ও গৃহিণীদের জন্য। তবে সবাই আবেদন করতে পারেন।
এই তিনটি কোর্সের যেকোন একটি করে তা বাস্তব জীবনে কাজে লাগালেই রন্ধনশিল্পে সফলভাবে ক্যারিয়ার গড়া সম্ভব। কারণ এমন অনেক রেস্টুরেন্ট আছে যারা শুধুমাত্র চাইনিজ কিংবা শুধুমাত্র ডেজার্ট বা ফাস্টফুড বিক্রি করেও ভালো ব্যবসা করছে।
অনেকে আছেন এই পেশায় আসার কথা শুনলে ঠাট্টা করেন সেক্ষেত্রে নিজের অনুপ্রেরণা ধরে রাখার উপায় কি?
জাহিদা বেগম: লোকজনতো তাকে নিয়ে কথা বলবেই যে কাজ করে। আর কাজ করতে গেলে ছোট খাট কিছু ভুল ত্রুটি, চড়াই উতরাই থাকতেই পারে। তবে রন্ধনশিল্পকে পেশা হিসেবে নেওয়ার আগে মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে এবং নিজেকে পাঁচ বছর পর কোন জায়গায় দেখতে চান তার মনোছবি আঁকতে হবে। কোন কাজ কিংবা কোন পেশাই ছোট নয়। রন্ধনশিল্প একটি আর্ন্তজাতিক পেশা। দেশেও দিনে দিনে এর কদর বাড়ছে। সাময়িক হাসি-ঠাট্টা দেখে আপনার মন খারাপ হতে পারে। তবে একটা কথা মনে রাখবেন, এই পৃথিবী কোনদিন কোন সমালোচককে মনে রাখেনি বরং যাকে নিয়ে সমালোচনা করা হয়েছে তাকেই মনে রেখেছে। সমালোচনা করা সহজ কিন্তু আলোচিত হওয়া কঠিন। কাজেই নিজের কাজকে ভালোবাসুন এবং রন্ধনশিল্পকে পেশা হিসেবে নিতে হলে নিজেকে সকল প্রকার সমালোচনার উর্ধ্বে উঠিয়ে নিবেদিত প্রাণ হয়ে কাজ করুন। তাহলেই এসব ঠাট্টা বিদ্রুপে আপনার কিছু মনে হবেনা। তবে এখানে উল্লেখ্য; রন্ধনশিল্প পেশা নিয়ে ঠাট্টার বিষয়টি এখন আর বাস্তব নয়! এটা আগে মানুষ না জেনে করতো। যখন মানুষ সবাইকে গণহারে বাবুর্চি মনে করতো। এখন আপনি ফেসবুকে অন্তত কয়েক হাজার বাংলাদেশী ছেলেমেয়েদের প্রোফাইল পাবেন যারা নিজের নামের সাথে শেফ কথাটি জুড়ে দিয়েছে এবং গর্বের সাথে শেফের জ্যাকেট এবং হ্যাটসহ নিজের প্রোফাইল পিকচার দিয়েছে। এদের সিংহভাগই আমার ছাত্রছাত্রী। এই পরিবর্তনটা আমরা করেছি, এনএইচটিটিআই করেছে। আমরা তাদের শেফের পেশা নিয়ে গর্বিত হতে শিখিয়েছি।
 
রন্ধনশিল্পকে কাজে লাগিয়ে কিভাবে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি করা সম্ভব?
জাহিদা বেগম: আমরা যখন কলেজ কিংবা ইউনিভার্সিটিতে পড়তাম তখন এদেশে হাতেগোনা দশ থেকে পনেরটি চাইনিজ রেস্টুরেন্ট ছিলো, চাইনিজ খাওয়াটা তখন ছিলো একপ্রকার বিলাসিতা। কিন্তু এখন প্রত্যেক গলিতে, পাড়ায়, মহল্লায় চাইনিজ রেস্তোরা গড়ে উঠেছে। ২০১০ সালের পর থেকে দেশে হাজার হাজার রেস্টুরেন্ট গড়ে উঠেছে শুধুমাত্র বার্গার-পিজ্জা-পাস্তা এবং চিকেন ফ্রাই নির্ভর আইটেম দিয়ে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই খাবারের পুষ্টিগুণ এবং স্বাস্থ্যবিধি (হাইজিন) অনুসরণের বিষয়টি উপেক্ষিত হচ্ছে। ফলে যারা এসব খাবার খাচ্ছেন তাদের অনেকেই স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে ।
তবে যদি সামান্য রন্ধনশিল্প বিষয়ক জ্ঞান তাদের থাকতো তাহলে স্বাস্থ্যবিধি পুষ্টিগুণের জায়গায় আমরা আরও ভালো করতে পারতাম। এবং স্বাস্থ্যঝুঁকিও মানুষের কমে আসতো। যেমন ধরুন তেল একবার ব্যবহার করলে তার আণবিক বন্ধনগুলো ভেঙ্গে যায়। কাজেই ব্যবহৃত তেল দিয়ে চিকেন ফ্রাই তৈরি করা মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিকর।
এই সামান্য স্বাস্থ্য সচেতনতার বিষয়গুলো মাথায় রেখে যদি নতুন উদ্যোক্তারা রন্ধনশিল্প নিয়ে কাজ করতেন তাহলে বাজারে তাদের গ্রহণযোগ্যতা অনেকাংশে বেড়ে যেতো। এখন অনেকে সহজেই এটাকে ব্যবসা হিসেবে নিচ্ছেন। কিন্তু তাদের দায়বদ্ধতা ও দক্ষতা উভয়ই খুব কম। আমি মনে করি, কোয়ালিটির দিকে বিবেচনা করলে এইসব উদ্যোক্তাদের অনেকেরই ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে সমস্যা হবে। লোভ আর লাভের পার্থক্য না করতে পারলে উন্নতি সম্ভব নয়।
রান্নাকে পেশা হিসেবে নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রধান চ্যালেঞ্জগুলো কি কি?
জাহিদা বেগম: প্রচলিত ডাক্তার এবং ইঞ্জিনিয়ারিং বা অন্যান্য স্বপ্নকে বাদ দিয়ে রন্ধনশিল্পী হিসেবে আত্নপ্রকাশ করাটাই আমাদের সমাজে একটা বড় চ্যালেঞ্জ। এক্ষেত্রে প্রথমত মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। যত বাধাই আসুক না কেন দমে যাওয়া যাবেনা। লেগে থাকতে হবে। কাজটাকে মনপ্রাণ দিয়ে ভালোবাসতে হবে। বস্তুত সবাই শেফের দিকেই তাকিয়ে আছে। কারণ সবারই আছে ক্ষুধা! চৌকষতা, সৃজনশীলতা এবং গতিময়তা দেখানোর একটি অপার সম্ভবনাময় ক্ষেত্র হচ্ছে রন্ধনশিল্প। তাই এ পেশায় যেটা চ্যালেঞ্জ সেটাই আসলে জয়ের নতুন সম্ভবনা।
তরুণদের মাঝে আপনি কি কি সমস্যা দেখতে পান? এটাকে তারা কিভাবে কাটিয়ে উঠবে?
জাহিদা বেগম: একজন রন্ধনশিল্পী যখন তার পেশাদারিত্বের জায়গায় প্রবেশ করবে তখন তাকে বাহ্যিক দুনিয়ার সকল প্রকারের চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে হবে। থালাবাসন ধোয়ামোছা থেকে শুরু করে মাছ, মাংস, সবজি কাটা থেকে আরম্ভ করে রান্না এবং পরিবেশনার শেষ পর্যন্ত প্রত্যেকটি কাজ হাতে কলমে জানতে হয়। এমনকি আপনি নিজে যদি কাজ নাও করেন, অন্যকে দিয়ে যদি কাজ চালিয়ে নিতে চান, তাহলেও কিন্তু আপনাকে কাজগুলো কিভাবে করতে হয় জানতে হবে। হাতে কলমে কাজ না শিখে কখনোই যথাযথভাবে পরিচালনার দায়িত্ব পালন করা যায়না।
সফলতা ধাপে ধাপে আসে। নতুনদের মাঝে এই ধাপগুলো অনুসরণ না করে সহজেই ওপরে উঠার একটা চিন্তা লক্ষ্য করা যায়। হয়তো অনেকেই রন্ধনশিল্পী হতে চায়, কিন্তু তার মতে থালাবাসন পরিষ্কার করাটা একটি অমর্যাদাকর কাজ। রন্ধনশিল্পের সাথে সম্পৃক্ত প্রতিটি কাজই সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যখন আপনার পেশাদারিত্বের জায়গায় থাকবেন তখন প্রেস্টিজ নিয়ে ভাবা যাবেনা। ভাবতে হবে শুধুমাত্র পেশাদারিত্ব নিয়ে। এই পেশাদারিত্বই আপনাকে প্রেস্টিজ এনে দিবে।  
মেয়েদের এই পেশায় সম্ভবনা কেমন?
জাহিদা বেগম: আমাদের দেশে মেয়েরা আজও অবহেলিত। অনেক মেয়েই আছেন ঘরে বসে থাকেন, অনেক ছেলেরাও আছেন বছরের পর বছর, মাসের পর মাস বেকার বসে আছেন। কিছু করতে চান কিন্তু আত্নসম্মানের ভয়ে রান্না শিখতে চান না বা রান্নাকে পেশা হিসেবে নিতে চান না। খুব কম পরিমাণ পড়াশুনা করেও শুধুমাত্র রন্ধনশিল্প পারদর্শীতা থাকলে নিজের সফলতাকে আর্ন্তজাতিক পরিমণ্ডলেও ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব।
অন্ধের মত অন্যের দেখিয়ে দেওয়া পেশায় ক্যারিয়ার গড়ার পরিকল্পনা করবেন না। প্রথম থেকেই যদি রন্ধন শিল্পকে ভালোবেসে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন তাহলে বেকারত্ব থাকবে না। বরং আপনার কাজ দ্বারা আপনি সমাজকে এবং দেশকে গর্বিত করতে পারবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১১:২৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৭


EmoticonEmoticon