৩৮ তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা কাটমার্কস ও অন্যান্য প্রসঙ্গ

১. সবচিন্তা বাদ দিয়ে,যারা ১০০+ পাবেন কাল/পরশু থেকে কিছু কাজ শুরু করুন।যদি কোন কারনে প্রিলিতে নাও হয়,তবে ব্যাংক বা অন্যান্য পরীক্ষার রিটেন পার্টে নিশ্চিতভাবেই এগিয়ে থাকবেন।সামনে যেহেতু ৩৯তম বিসিএস আছে,রিটেনের জন্য খুব বেশি সময় পাবেন না।


 ২.একটি বাংলা পত্রিকা এবং একটি ইংরেজি পত্রিকায় নিয়মিত চোখ বুলানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন।
৩.অর্থনৈতিক সমীক্ষা-২০১৭ সংগ্রহ করে ফেলুন।

৪.একটি ম্যাপের বই কিনে ফেলুন।

৫.পেপার কাটাকাটির অভ্যাস গড়ে তুলুন।

৬.হাতের কাছে নেট কানেকশন রাখুন।টপিক অনুসারে তথ্য সংগ্রহ করতে গুগল ভ্রাতাকে স্মরণ করুন।

৭.কিছু নোটখাতা রেডি রাখুন,তথ্য সংগ্রহ করে রাখার জন্য।

৮.কিছু বেসিক বই কালেকশন করে রাখুন।

৯.কোন বিষয়ের জন্য কোন প্রকাশনের বই ভাল,সে বিষয়ে খোজ নিন।

১০.সর্বোপরি,রিটেনের জন্য একটা সলিড প্রিপারেশনের জন্য মেন্টালি প্রিপায়ার্ড হয়ে যান।

দেখবেন,এই গুছাতে গুছাতেই ১৫/২০ দিন লেগে গেছে।
তাই গুছানোর কাজটি দ্রুতই শুরু করুন।

যে যাই বলুক,রেজাল্টের জন্য দিন না গুনে কাজে লেগে যান।ক্রিয়েটিভ এবং পরিশ্রমী প্রস্তুতিই আপনাকে আপনার স্বপ্নের কাছে পৌছে দিবে। 

মাহমুদ হাসান হৃদয়
৩৬তম বিসিএস-প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত
সহকারী পরিচালক,বাংলাদেশ ব্যাংক

#৩৮তম #প্রিলি #কাটমার্ক #প্রসঙ্গঃ

ছবদুলের ছেলে আবদুল এই প্রথম ৩৮ তম বিসিএস প্রিলিমিনারীতে অংশ নিল। পরীক্ষার প্রস্তুতির দাওয়া হিসেবে প্রথমেই সে বিগত বছরের প্রশ্নগুলো ঝালিয়ে নিয়েছিল। পড়তে পড়তে এতটাই মনস্থ হয়ে গেছে যে চোখের সামনে যা দেখে সব পানির মত সোজা! যথারীতি এক্সাম হলে গিয়ে দেখলো প্রশ্ন বেশ সহজ। দাগাতে দাগাতে সে এই প্রশ্নে ১৮৫ টা গোল্লা ভরাট করলো বেশ আনন্দে। এক্সাম শেষে বাড়ী ফিরে ফেসবুকে স্ট্যাটাস মারলো -"৩৮তম প্রিলির মত এত সহজ প্রশ্নে আগে কখনও সে দেখে নাই। এবার কাট মার্ক হবে ১৫০+......
:
সংসার সামলিয়ে সময়ের ফাঁক ফোকড়ে ফেসবুকের স্টাডি গ্রুপগুলোতে বেশ মনযোগ দিয়ো পড়ালেখা(!) করতো আকলিমা। নিয়মিত ফেসবুকীয় মডেল টেষ্টে নিজেকে ঝালিয়ে নিয়েছিল বেশ! এক্সাম হলে প্রশ্ন বেশ কমন মনে হলো। উত্তরপত্রে ১৬০ টি শিওর ভরাট করে বাড়ী ফিরলো। এরপর ফেসবুকে লিখলো অনেক ভালো হলো এক্সাম। প্রশ্ন বেশ সোজা ছিল। কাট মার্ক হবে এবার নিশ্চিত ১৪০........
:

সারা বছর অপুর প্রেমে অন্ধ ছাকিব চাকুরি পায় না বলে অপু তাকে বিয়ের আগেই ডিভোর্স দিল! মনে জিদ চেপে পরীক্ষার ২সপ্তাহ আগে পড়ার টেবিল মুখী ছাকিবের সে কী সংগ্রাম। ৩৮ তম বিসিএসে ক্যাডার এবার হতেই হবে! প্রতিনিয়ত প্রেমের বৈদ্যুতিক আগুনে শকে বিদগ্ধ কয়লা হয়ে এক্সাম হলে বসা ছাকিবে চোখের সামনে প্রশ্ন- "বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনে জ্বালানী হিসেবে সর্বাধিক ব্যবহৃত হয়_____। অপশনে কয়লা দেখেই উত্তরপত্র ভরাট করে অনেক খুশি! পরেরগুলোও কমন। ১৫০টি গোল্লা ভরাটে এক্সাম শেষে সেও হয়ে উঠলো কাটমার্ক বিশেষঅজ্ঞ(!)! অতঃপর ফেসবুকে স্ট্যাটাস- "কাটমার্ক হবে ১৪০+.......
:
এরুপ এক্সাম শেষ করে বাড়ী ফিরে ফেসবুকে স্ট্যাটাসে কাটমার্ক জানান দেওয়া পাব্লিক অনেক আছে। এরা কঠিন প্রশ্নে কাটমার্ক বসায় ১২০+ আবার সহজ প্রশ্নে ভবিষ্যত দেখায় ১৩০+ ! দিনশেষে একের পর এক সলুশন দেখে তারপর নিজেরাই আবার কাটমার্ক কমাতে থাকে.........
:
ইতিহাস স্বাক্ষী প্রশ্নকে সহজ ভেবে যারা কাটমার্কের বাটি চালান থামায় ১৪০ নম্বরে। দিন শেষে সলুশন এরাই পায় ২০০ নম্বরে ১০০ এর নিচে। এভাবে এক্সামের দিন যত বেশি পার হয় তাদের নাম্বার তত বেশি কমতে থাকে! রেজাল্টের দিন তারা অধিকাংশই হারিয়ে যায়....
:
একটা এক্সামের প্রশ্ন খুব বেশি পানির মত যদি সহজ হয় তাহলে ভালো এবং জঠিল প্রস্তুতি নেওয়া শিক্ষার্থীরা পড়ে যায় চরম বিপাকে! তারা প্রশ্ন পত্রকে অতি সহজ ভেবে কাটমার্ক ১৪০+ কে টার্গেট করে অতিরিক্ত গোল্লা ভরাট করে। ভুল করে মাত্রাতিরিক্ত। অতঃপর প্লাস মাইনাস করে তাদের নাম্বার দাঁড়ায় ১১০-১২০+.......
:
আবার প্রশ্ন যদি খুব বেশি কঠিন হয় তাহলে মধ্যম প্রস্তুতি নেওয়া শিক্ষার্থীদের এক্সাম হলে এটা ভাবনায় আসে যে প্রশ্ন তার কমন আসে নি। হয়তো সে টিকবে না। নিজের মত করে ১৪০-১৫০ টি দাগায়। বড় সড় নেগেটিভ নম্বর অর্জন করে। টোটাল পায় ১০০ এর নিচে......
:
আমি বিসিএস ক্যাডার নই। সে বয়সও আর নেই। তবে বিগত বেশ কয়েকবার এক্সামের, এক্সাম পরবর্তী ফেসবুকীয় কাটমার্কের অভিজ্ঞতা এবং আজকের এক্সাম প্রশ্ন দেখে মনে হয়েছে প্রশ্নের মান খারাপ না এবং এই প্রশ্ন দিয়েই প্রায় সাড়ে তিন লাখ পরীক্ষার্থীদের (যদিও ৫৭ হাজারের বেশি অনুপস্থিত ছিল) ভিতর থেকে তিন লাখ একবারে ছিটকে ফেলানো যায়!
:
অনুপস্থিত বাদে প্রায় ২লাখ ৫০ হাজারের ভিতর থেকে পিএসসি যদি মোটামুটি ৮-১০ হাজার জনকে রিটেনের টিকেট দেয় সেক্ষেত্রে কাটমার্ক হতে পারে ১১০+। আবার আর একটু বেশি হিসেবে যদি ১২-১৫ হাজার জনকে রিটেনে বসার সুযোগ দেয় সেক্ষেত্রে কাট মার্ক হতে পারে ১০৫+......
:
এক্সাম যে যেমনই দিক, ফেসবুকে ফেসবুকে প্রশ্ন সহজের ধোয়া যেমনই তুলুক এটা সত্যি যে এক্সাম দিয়ে বাড়ী আসার পর কাটমার্ক যতটা থাকে এক্সামের ১০দিন পর ততটা থাকে না বরং কমতে কমতে যথার্থ একটি জায়গায় এসে থামে। এবারও তার বিপরীত হবে না বলেই বিশ্বাস। কেননা আমরা প্রায়ই ভুলে যায় যে এক্সাম যতটা সহজ ভাবি ততটা নয় বরং স্ট্যান্ডার্ড। একটি পানির মত সহজ প্রশ্নে ২০০ নম্বরের ভিতরে ৮-১০ টি কনফিউশন প্রশ্ন, ৪-৫টি উত্তরের গরমিল (একাধিক থাকা/না থাকা) থাকবেই। কেননা পিএসসি আমাদের মায়ের পেটের খালাতো ভাই এবং তার কাজই হলো বাদ দিয়ে নির্যাসটুকু রেখে দেওয়া.....

সুতরাং যারা আজ ১২০, ১৩০, ১৪০ কাটমার্কের প্রসবে ফেসবুক ভাসাচ্ছে তাদের নিউজে কান না দিয়ে বরং যারা মোটামুটি বর্তমান সলুশনেই ১১০+ পাবে, তাদের উচিত আগে ভাগে আত্মবিশ্বাসে ভর করে রিটেনের প্রস্তুতিতে বসে যাওয়া। এতে লাভ ছাড়া কোন লস কিন্তু দেখি না...........

সৌজন্যেঃ Hossain Muhammad Jony

কাটমার্কস ও অন্যান্য প্রসঙ্গঃ ৩৮ তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা


Shamim Anwar
এএসপি, বাংলাদেশ পুলিশ
৩৪ তম বিসিএস, মেধাক্রম ১১
.................................................
" সাবধান!!! আর এক মুহূর্ত দেরিও নয়, এক্ষুনি পরের ধাপের জন্য পড়া শুরু করুন, অন্যথায় আপনার মহাসর্বনাশ ঘটে যেতে পারে " এমন কথা বলার মতো নির্দয় আর যে-ই হোক, অন্তত আমি নই।
প্রিলির প্রস্তুতি সবার একরকম ছিল না। কেউ বেশি কেউ কম পড়েছেন, কিন্তু মানসিক ধকল কারো ওপর দিয়েই কম যায় নি। তাই পরীক্ষা ভাল-খারাপ যা-ই হোক, এখন সময় উড়ন্ত গাঙচিলের কিছু নির্ভারতা, একান্ত নিজের জন্য কিছু সময়, বন্ধুরা মিলে কিছু হৈহল্লা- চা সিগ্রেট ------ আবার দেইখেন, জন উপদ্রব সৃষ্টিকারী কোন কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েন না, ( পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে) আহা! আই উইশ, আপনাদের সাথে যোগ দিতে পারতাম!! (মনে মনে)

>>কতো হতে পারে #কাট #মার্কস
প্রথাগত কোন ভবিষ্যদ্বাণী নয় ( ঠিকই ভাবছেন, সেটি করার জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতাও তো থাকতে হবে)। নিজের বিসিএস অভিযাত্রার অভিজ্ঞতার সাথে সাম্প্রতিক কয়েকটি বিসিএসের কাটমার্কসের প্রবণতাকে সমন্বয় করে আমি কিছু পর্যবেক্ষণ তুলে ধরছি। না মিললে পরে আবার লাঠিসোঁটা নিয়ে মারতে- টারতে আইসেন না!!!

>>৯৫র নিচে
পরের বিসিএস এবং অন্যান্য চাকুরির জন্য প্রস্তুতি শুরু করুন। বিশেষ করে বেসিক বিল্ড আপে মনযোগী হোন। ( আমার টাইমলাইনে এ বিষয়ক লেখা আছে, প্রয়োজন মনে করলে দেখে নিতে পারেন) পরীক্ষার হলে এবং পরীক্ষা শুরুর আগে যে যে ভুলের কারনে এ বিপর্যয়টি ঘটল, তার পুনরাবৃত্তি এই বিভীষিকাময় দিনটিকে বারবার ডেকে আনবে--- এ মর্মে মনের সাথে বোঝাপড়া সেরে নিন। গভীর আত্মসমালোচনায় প্রবৃত্ত হোন। ঘুরে দাড়ানোর লক্ষ্যে নিজেকে সংকল্পবদ্ধ করুন।

>>৯৫---১১০
আপনাদের জন্য আমার কাছে এই মুহূর্তে কোন সুসংবাদ নেই। হয়ত খুব বেশি সংখ্যক প্রার্থীকে (২০,০০০ এর অধিক) পাস করালে হয়ত কিছু হলেও হতে পারে, এই ভেবে আশার শুষ্ক সলতের মিটিমিটি প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখতে পারেন ।

>>১১০---১১৫
সামান্য রিস্ক থাকলেও আমার ধারনা আপনারা এ যাত্রা শেষমেশ উতরেই যেতে পারেন। রিটেনের প্রস্তুতি শুরুর পাশাপাশি পরের বারের প্রিলি ও অলরেডি এপ্লাই করা অন্যান্য চাকুরি পরীক্ষার জন্য ব্যালেন্সড প্রস্তুতি নিন।

>>১১৫+
চা সিগ্রেটের আড্ডাটা পলাশীর মোড়ে না করে নীলক্ষেত গাউসুল আজম মার্কেটের সামনে করবেন। আসার সময় নিলক্ষেত থেকে রিটেনের একদুইটা বই বগলদাবা করে নিন (টাকা পরিশোধ করতে ভুলবেন না)। আজ না হোক, কাল পরশুর মধ্যে সেটির পাতা উল্টেপাল্টে দেখা শুরু করুন। মোটামুটি নিশ্চিতভাবে অংশগ্রহণ করতে যাওয়া একটি রিটেন পরীক্ষার গোছানো প্রস্তুতির জন্য মনকে তৈরি করুন।

>>১২০+
আফনেরে চা- সিগ্রেট আমিই খাওয়ামু, মি:/মিস ভবিষ্যত ক্যাডার। এ মুহূর্তের করণীয় সম্পর্কে আপনাকে উপদেশ খয়রাতের দুঃসাহস করব না, নিজেই ভেবে নিন।
ধন্যবাদ। নিরন্তর শুভকামনা।

( একটু পর আমার এই লেখাটিকেও কি বিভিন্ন গ্রুপ/পেজে অন্যজনের নামে পোস্ট হতে দেখব? তাতে অবশ্য আমার লাভও হতে পারে। রেজাল্ট হবার পর আমার বলা কথার সাথে প্রকাশিত ফলাফলের রাতদিন তফাত দেখা গেলে আপনাদের এত লোকের লাঠির বারি কিন্তু ওই ব্যক্তির পিঠের ওপরই পড়বে)।
পোস্টটি শেয়ার করুন ...


EmoticonEmoticon