প্রকৃত, রিয়্যাক্টিভ ও আপাত পাওয়ার (Active, Reactive and Apparent Power) এবং পাওয়ার ফ্যাক্টর সম্পর্কে বিস্তারিত

আপাত পাওয়ার, প্রকৃত পাওয়ার ও রিয়্যাক্টিভ পাওয়ার এর সম্পর্ক বোঝানোর জন্য এই ছবিগুলো অনেক সাহা্য্য করতে পারে।



এসি সার্কিটের পাওয়ার:এসি সার্কিটে রেজিস্টর,ক্যাপাসিটর,ইন্ডাক্টর ব্যাবহৃত হয়,অন্যদিকে ডিসি সার্কিটে শুধুমাত্র রেজিস্টর ব্যবহৃত হয় তাই ডিসি কারেন্ট রেজিস্ট্যান্স জনিত বাধার সম্মুখীন হয় ।তাই ভোল্টেজ এবং কারেন্টকে গুন করলে প্রকৃত পাওয়ারপাওয়া যায়।কিন্তু এসি কারেন্ট তিন ধরনের রোধ বা বাধার সম্মখীন হয়,রেজিস্টিভ,ক্যাপাসিটিভ এবংইন্ডাকটিভ রোধ বা বাধা।এসি ক্যাপাসিটিভ এবং ইন্ডাকটিভ সার্কিটে (বিশুদ্ধ রেজিস্টিভ সার্কিট ব্যাতিত)কারেন্টের দুটি কম্পোনেন্ট বা উপাংশ থাকে।


১।আনুভূমিক বা ইনফেজ বা অ্যাক্টিভ উপাংশ যাকে ইনফেজ বা অ্যাকটিভ কারেন্ট বলে।ইহা ভোল্টেজের সাথে ইনফেজ বা বরাবর অবস্থান করে।
২।উলম্ব বা কোয়াড্রেচার বা রিয়্যাকটিভ উপাংশ যাকে কোয়াড্রেচার বারিয়্যাকটিভ কারেন্টবলে ইহা ভোল্টেজের সাথে ৯০ ডিগ্রী লিড বা ল্যাগ করে। 

ইন্ডাকটিভ সার্কিটের পাওয়ার ত্রিভূজ।এখানে P প্রকৃত পাওয়ার,Q রিয়্যাকটিভ পাওয়ার এবংS আপাত পাওয়ার।


তাই এসি সার্কিটের পাওয়ার মোট কারেন্ট,অ্যাকটিভ কারেন্ট এবং রিয়্যাকটিভ কারেন্ট উপর ভিত্তি করে তিন ভাগে ভাগ করা হয়।যথা:
১।আপাত পাওয়ার(Apparent power)
২।প্রকৃত পাওয়ার(active or real power)
৩।রিয়্যাকটিভ পাওয়ার(Reactive power)




♥♥আপাত পাওয়ার(Apparent power):ভোল্টেজ এবং কারেন্টর গুনফলকে আপাত পাওয়ার বলে।এর একক VA বা KVA.
♥♥ প্রকৃত পাওয়ার(Active power):ভোল্টেজ এবং ইনফেজ কারেন্টর গুনফলকে প্রকৃত পাওয়ার বলে।এর একক W বা KW.
♥♥ রিয়্যাক্টিভ পাওয়ার:ভোল্টেজ এবং রিয়্যাক্টিভ কারেন্টের গুনফলকে রিয়্যাক্টিভ পাওয়ার বলে। এর একক VAR বা KVAR.


পাওয়ার ফ্যাক্টর = (প্রকৃত পাওয়ার / ‍অাপাত পাওয়ার) = P active/P apparent = KW/KVA = CosƟ



পাওয়ার ফ্যাক্টর অবনতির কুফল: কোন এসি সার্কিটের পাওয়ার ফ্যাক্টর যে হারে কমতে থাকে, সার্কিট দিয়ে প্রবাহিত কারেন্টের পরিমান ও সেই হারে বাড়তে আরাম্ভ করে। এতে সরবরাহ লাইনের পরিবাহী আর জেনারেটর, ট্রান্সফরমার প্রভৃতি মেশিনে উত্তাপজনিত বৈদ্যুতিক শক্তির অপচয় বহুগুণে বেড়ে যায়। কারন, কোন পরিবাহীর মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহের ফলে সেই পরিবাহী গরম হয়ে যে পরিমান তড়িৎ শক্তির অপচয় ঘটায় তাহা তড়িৎ প্রবাহের বর্গফলের সমানুপাতিক হয়।


শক্তির অপচয়ের এই বৃদ্ধিতে সরবরাহ লাইনের এবং জেনারেটর, ট্রান্সফরমার প্রভৃতি মেশিনের কর্মদক্ষতা অনেকখানি কমে যায়। তাছাড়া মেশিনগুলিও অপেক্ষাকৃত অল্প সময়ের মধ্যে কাজের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এতে সরবরাহকারী আর গ্রাহক উভয়েই ক্ষতিগ্রস্ত হন।

সরবরাহ লাইন দিয়ে যখন কারেন্ট প্রবাহিত হয় তখন লাইনে ভোল্টেজ ড্রপ হয়। লাইনের ইম্পিডেন্স কে  কারেন্ট দিয়ে গুন করলে যত হয়, ভোল্টেজ ড্রপের পরিমান ঠিক তত ভোল্ট হয়। সুতারাং পাওয়ার ফ্যাক্টর কমে যাওয়ার ফলে লাইন দিয়ে যখন অপেক্ষাকৃত বেশি কারেন্ট প্রবাহিত হতে থাকে, তখন স্বাভাবিক কারনেই লাইনে ভোল্টেজ ড্রপের পরিমান বৃদ্ধি পায়, আর সেই সঙ্গে লোড সার্কিটের টার্মিনাল ভোল্টেজ কমে যায়। এতে কেবল মাত্র যে,  আলো গুলি কম জোরে জ্বলে বা পাখা গুলি আস্তে আস্তে ঘোরে তাই নয়, লোড সার্কিটে যে সমস্ত বৈদ্যুতিক মোটর লাগানো থাকে, সেই গুলি বিশেষ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। 

এইসব কুফল দেখা দেয় বলেই এসি সার্কিটে পাওয়ার ফ্যাক্টরের অবনতি ঘটলে তার মান উন্নত করা একান্ত ভাবে আবশ্যক।

পাওয়ার ফ্যাক্ট্রর Correction : বলতে আমরা সহজে বুঝি কোন একটা সিস্টেমে Reactive পাওয়ার এর পরিমান কমিয়ে Active পাওয়ার এর পরিমান বাড়ানো। আমরা সাধারনত ক্যাপাসিটর ব্যাংক অথবা সিংক্রোনাস মোটর ব্যবহার করে পাওয়ার ফ্যাক্টর Correction ও improve করে থাকি। ইন্ডাস্ট্রিতে Capacitor Bank ব্যবহার করে পাওয়ার ফ্যাক্টর Correction করা হয়। আমরা centrally ক্যাপাসিটর ব্যাঙ্ক ব্যবহার না করে প্রত্যেক লোডে ক্যাপাসিটর ব্যবহার করতে পারি। অথবা যে সব লোড লো পাওয়ার ফ্যাক্টর এর জন্য দায়ী সে সব লোড এর ব্যবহার কমিয়ে ও পাওয়ার ফ্যাক্টর ইম্প্রুভ করতে পারি।


EmoticonEmoticon