জিপি, বাংলালিংক, রবি, এয়ারটেল, টেলিটক সিম নাম্বার ঠিক রেখে অপারেটর বদল

জিপি, বাংলালিংক, রবি, এয়ারটেল, টেলিটক সিম নাম্বার ঠিক রেখে অপারেটর বদল।
ধরে নিলাম , আপনি বর্তমানে রবি বা বাংলালিংক সিম ব্যবহার করছেন । আপনি চাচ্ছেন সিম নাম্বার ঠিক রেখে অন্য অপারেটর পরিবর্তন করতে । যেমন, আপনি রবি অপারেটরে আছে, রবির নাম্বার যা আছে থাকবে শুধু অপারেটর চেঞ্জ করবেন। হতে পারে জিপি, বাংলালিংক, এয়ারটেল কিংবা টেলিটক । এর ফলে আপনি ওই অপারেটরের বিভিন্ন ধরনের সেবা উপভোগ করতে পারবেন ।  চলুন আজকের আলোচনায় জেনে নেই, কিভাবে নাম্বার ঠিক রেখে অপারেটর বদল করা যায় ।  তবে তার আগে জেনে নেই এমএনবি কি ?

এমএনবি কি (MNP)


এমএনপি হচ্ছে সংক্ষিপ্ত রুপ এর ফুল ফর্ম হচ্ছে মোবাইল নাম্বার পোর্টবিলিটি (MNP- Mobile Number Portability)  । অর্থাৎ নিজের নাম্বার পরিবর্তন না করে অন্য অপারেটরে যাওয়া কে এমএনবি পদ্ধতি বলে । আপনি জিপির নাম্বার ঠিক রেখে বাংলাদেশের যেকোন সিম অপারেটরে MNP করার মাধ্যেমে যতে পারেন ।

নোটঃ নাম্বার এমএনপি করার ৯০ দিন পর আপনি অন্য অপারেটর বা আগের অপারেটরে ফিরে আসতে পারেন । এমএনপি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে নির্দিষ্ট অপারেটর সেবা কেন্দ্র থেকে তথ্য সংগ্রহ করুন ।


রবি অপারেটরে আসার নিয়ম


রবি নেটওয়ারে আসার জন্য আপনি আপনার এলাকার নিকত বর্তি কাস্টমার কেয়ারে যান ।  রবি সেবা কেন্দ্রে আপনার করনীয় ।

আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র সাথে নিন এবং যে অপারেটর এর নাম্বার পরিবর্তন করবেন সেই সিমটি সাথে নিন ।
অপারেটর পরিবর্তন করার জন্য বায়োমেট্রিক রেজিষ্টেশন করুন ।
এবার নিয়ে নিন নতুন রবি সিম ।
কনফার্মেশন এসএমএস পেলেই রবির নতুন সিম ব্যবহার করতে পারবেন ।

গ্রামিনফোন অপারেটরে আসার নিয়ম


জিপি নেটওয়ার্কে আসার জন্য আপনার আশে পাশের GP Customer Care এ যান । জিপি সেবা কেন্দ্র যাবার পর আপনার এনআইডি (NID) কার্ড এর সকল তথ্য তাদের সাথে উপস্থাপন করুন । এরপর ফিঙ্গারপ্রিন্ট এর কাজ সম্পর্ন করে নিন । বর্তমান অপারেটর থেকে অন্য অপারেটরে যাবার পর MNP অনুমোদন এর এসএমএস পাবেন । এসএমএস পাবার পর আপনার সিম অপারেটর বদল হবে। আপনার আগের অপারেটরের সিম বন্ধ হয়ে যাবে । এবার আপনি জিপি অপারেটের সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন ।

বাংলালিংক অপারেটরে আসবেন কিভাবে


আপনার বর্তমান ব্যবহৃত নাম্বার ঠিক রেখেই আপনি অন্য যেকোন অপারেটরে যেতে পারবেন । সেটি করার জন্য আপনার ফোন নাম্বার সাথে ভোটার আইডি কার্ডের কপি সাথে নিয়ে আপনার এলাকার বাংলালিংক সেবা কেন্দ্রে চলে আসুন । এবার ভেরিফিকেশন করার জন্য আপনার ফিঙ্গারপ্রিন্ট প্রদান করুন । এরপর বাংলালিংক রেজিষ্ট্রেশন ফর্ম পরুন করে নিন । সব কিছু ঠিক করার পর নতুন বাংলালিংক সিম সার্ভিস প্রোভাইডার এর কাছ থেকে সংগ্রহ করুন । উপোভগ করুন বাংলালিংক অপারেটরের সকল প্রকার সার্ভিস ।


এয়ারটেল অপারেটরে আসবেন যেভাবে


মোবাইল নাম্বার পোর্টাবিলিটি (MNP) এর মাধ্যেমে এখন আপনার নাম্বার ঠিক রেখে Airtel বা অন্য যেকোন অপারেটরে আসতে পারেন নাম্বার না বদল করে । কিভাবে তা দেখে নেই ।

আপনার নিকটস্থ এয়ারটেল সেবা কেন্দ্র যান ।
আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র এর ফটোকপি এবং যে অপারেটর পরিবর্তন করবেন, সে নাম্বারটি ।
এবার আঙ্গুলের ছাপ দ্বারা আপনার সিমটি বায়োমেট্রিক করুন ।
আপনার Airtel নতুন সিম সার্ভিস প্রোভাইটার এর কাছ থেকে সংগ্রহ করুন ।

টেলিটক অপারেটর বদল করার নিয়ম


মোবাইল নাম্বার পরিবর্তন না করেই অপারেটর পরিবর্তন করুন । অপারেটর পরিবর্তন করার জন্য আপনি আপনার নিকটস্থ teletalk সেবা কেন্দ্রে যান । সেবা কেন্দ্রে যাবার সময় আপনার NID কপি সাথে নিন । এরপর সার্ভিস প্রোভাইটার দ্বারা আপনার ভেরিভেকেশনের কাজ সম্পর্ন করুন । অর্থাৎ ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিন । এবার আপনার নতুন টেলিটক সিমটি সংগ্রহ করুন ।

উপরক্ত নিয়ম অনুসারে আপনি নাম্বার ঠিক রেখে অপারেটর বদল করতে পারবেন । অপারেটর বদল সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন , grameenphone.combanglalink.net , robi.com.bd , bd.airtel.com , teletalk.com.bd

বিডিনিউজ২৪: আগের নম্বর অপরিবর্তিত রেখে অপারেটর বদলাতে একজন গ্রাহককে ৫০ টাকা ফির সঙ্গে সিম রিপ্লেসমেন্ট ট্যাক্স এবং ভ্যাটসহ মোট ১৫৮ টাকা দিতে হবে।

গত নভেম্বরে লাইসেন্স পাওয়া বাংলাদেশ ও স্লোভেনিয়ার কনসোর্টিয়াম ইনফোজিলিয়ন বিডি-টেলিটেক এই সেবার জন্য ‘নম্বর পোর্টেবিলিটি ক্লিয়ারিং হাউজের’ কাজ করছে।

প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, যেহেতু গ্রাহকের অপারেটর বদল হচ্ছে, সেহেতু তাকে নতুন অপারেটরের সিম তুলতে হবে।

>> গ্রাহক যে অপারেটরে যেতে চান, সেই অপারেটরের গ্রাহকসেবা কেন্দ্রে যেতে হবে। পুরনো অপারেটরের সচল সিমটি সঙ্গে নিতে হবে।

>> গ্রাহক সেবা কেন্দ্রে এমএনপি সেবা নেওয়ার কথা জানালে সেখান থেকে পুরনো অপারেটরের সঙ্গে অনলাইনে যোগাযোগ করে পোর্টিংয়ের (এক অপারেটর থেকে অন্য অপারেটর যাওয়ার অনুরোধ) আবেদন করা হবে।

>> পুরনো অপারেটর ছাড়পত্র দিলে নম্বর পোর্টেবিলিটি ক্লিয়ারিং হাউজ নম্বর পোর্টিং করে দেবে।

>> পুরো বিষয়টি হবে অনলাইনে। ইলেকট্রনিক রেজিস্ট্রেশন ব্যবস্থা চালু থাকায় গ্রাককে অপারেটর বদলাতে ছবি আর জাতীয় পরিচয়পত্র দেখাতে হবে না। আঙুলের ছাপ মিলে গেলেই তার তথ্য এক অপারেটর থেকে অন্য অপারেটরে স্থানান্তর হয়ে যাবে।

>> নতুন সিম পেতে একজন গ্রাহকের সময় লাগবে ৫ মিনিটের মত। তবে সিম সক্রিয় হতে সময় লাগবে সর্বোচ্চ ৭২ ঘণ্টা।

>> পোস্ট পেইড গ্রাহকের ক্ষেত্রে পুরনো অপারেটরের কাছে বকেয়া থাকলে তা পরিশোধ না করে অপরারেটর বদলানো যাবে না।

>> প্রিপেইড গ্রাহক নতুন অপারেটরের পোস্ট পেইডে বা পোস্ট পেইড গ্রাহক প্রিপেইডে যেতে পারবেন না।

>> পুরনো অপারেটরে অব্যবহৃত ব্যালেন্স বা ডেটা নতুন অপারেটরে স্থানান্তর হবে না। এ কারণে ব্যালেন্স শেষ করে তবেই এমএনপিতে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি।

>> আবারও অপারেটর পরিবর্তন করতে হলে গ্রাহককে ৯০ দিন অপেক্ষা করতে হবে।

'



টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জহুরুল হক সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এমএনপি সেবা শুরুর ঘোষণা দেন।

বিটিআরসির সিস্টেম অ্যান্ড সার্ভিস বিভাগের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আজিজুর রহমান সিদ্দিকী সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, আগের অপারেটরে কারও অব্যবহৃত ব্যালেন্স থাকলে তা দুই বছর পর্যন্ত পুরনো অপরেটরে জমা রাখার নিয়ম করা হচ্ছে।

দুই বছরের মধ্যে যদি কেউ আগের অপারেটরে ফিরে যান, তাহলে তিনি ওই ব্যালেন্স ব্যবহার করতে পারবেন। তা না হলে তা সরকারি কোষাগারে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা হবে।

বিটিআরসির হিসাবে, অগাস্ট মাস পর্যন্ত দেশে চারটি মোবাইল ফোন অপারেটরের মোট গ্রাহক সংখ্যা ১৫ কোটি ৪১ লাখ ৭৯ হাজার।

এর মধ্যে সাত কোটি ৭ লাখ ৯ হাজার গ্রাহক নিয়ে শীর্ষে রয়েছে গ্রামীণফোন। তাদের পরে রয়েছে রবি, তাদের গ্রাহক সংখ্যা চার কোটি ৬১ লাখ ৩২ হাজার। বাংলালিংকের গ্রাহক তিন কোটি ৩৪ লাখ ৬৬ হাজার এবং রাষ্ট্রায়ত্ত অপারেটর টেলিটকের গ্রাহক সংখ্যা ৩৮ লাখ ৭৩ হাজার।

বর্তমানে বিশ্বের ৭২টি দেশে এমএনপি সেবা চালু আছে। প্রতিবেশী দেশ ভারত ২০১১ সাল থেকে এবং পাকিস্তান ২০০৭ সাল থেকে এমএনপি সেবা দিচ্ছে।

আমাদের এই ছোট্ট লিখাগুলো আপনার ভালো লাগলে প্লিজ অন্যের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না ।


EmoticonEmoticon