সফল ক্যারিয়ার ও উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়তে শিক্ষার্থীদের জন্য ক্যারিয়ার টিপস

সফল ক্যারিয়ার ও উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়তে শিক্ষার্থীদের জন্য ক্যারিয়ার টিপস।
আজকের পৃথিবী দূর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে। প্রতি দিন কোন না কোন নতুন শিল্পের আবির্ভাব হচ্ছে, আর এমন সব শিল্পের জায়গা দখল করে নিচ্ছে যেগুলোর আর প্রয়োজন নেই। একই ভাবে আমাদের কাজের গতি এবং জ্ঞানের পরিসীমাও একই গতিতে পরিবর্তিত হচ্ছে। আধুনিক প্রকর্ষের সাথে আমরা বিভিন্ন শিল্প ও ক্ষেত্রে অটোমেশনের প্রভাব দেখতে পাচ্ছি।

কখনও কি ভেবে দেখেছেন যে আমরা শিক্ষাজীবনে যে দক্ষতা গুলোর চর্চা করছি সেগুলো ভবিষ্যতের জন্যও কাজে আসতে পারে?

নিঃসন্দেহে ভবিষ্যত প্রজন্মের তরুণরা আমাদের মত একই ধরণের চাকরি বা কাজ করবে না, বরং তখন কাজের ধরণ আর দক্ষতার প্রয়োজন সম্পূর্ণ আলাদা হবে। ইতোমধ্যে আমরা নতুন প্রজন্মের জন্য উপযুক্ত চাকরির যোগান দিতে হিমসিম খাচ্ছি। এখনকার তরুণ প্রজন্ম ভালো কাজ খুঁজে পেতে সমস্যা অনুভব করছে এবং ভবিষ্যত ক্যারিয়ার সম্পর্কে পরামর্শ পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে রয়েছে।

একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আপনি খুব শীঘ্রই বুঝতে পারবেন যে আমাদের স্কুল-কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্জিত জ্ঞান বাস্তব জীবনের জন্য এখন আর ততটা কাজে আসছে না। গ্র্যাজুয়েশন শেষ হতে হতে আমাদের সার্টিফিকেট গুলো অবান্তর এবং অচল হয়ে পড়ে। চাকরিদাতারা আজকাল এমন ধরণের দক্ষতার খোঁজ করছেন যেগুলো নতুন চাকরি সন্ধানীদের মধ্যে তেমনটা পাওয়া যায় না। অনেক গ্র্যাজুয়েটদেরই উচ্চাকাঙ্খা ও অভিলাষ থাকে, অথচ আজকের প্রতিযোগিতামূলক চাকরির বাজারে চাকরিদাতাদের মনে ছাপ ফেলতে পারে না। আমাদের আজকের প্রতিবেদনে আমরা ভবিষ্যত ক্যারিয়ার গড়ার জন্য সহায়ক বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকরী দক্ষতা, ক্যারিয়ার টিপস এবং আত্ম উন্নয়ন সংক্রান্ত টিপস নিয়ে আলোচনা করবো, বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের জন্য।

ব্যবসায় সফল ক্যারিয়ার ও উজ্জ্বল ভবিষ্যত গড়তে শিক্ষার্থীদের জন্য ক্যারিয়ার টিপস

১. যোগাযোগের দক্ষতা

যোগাযোগের প্রয়োজন আজ যতটা গুরুত্বপূর্ণ, অতীতেও ঠিক ততটাই ছিলো এবং ভবিষ্যতে আরো বেশি প্রয়োজনীয় হয়ে উঠবে। লিখিত ও মৌখিক পদ্ধতিই যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম নয়, কিন্তু সেই সাথে অনলাইন যোগাযোগও এখন অনেক বড়ো একটি মাধ্যমে পরিণত হয়েছে। ইমেইল, ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং, সোশ্যাল মিডিয়া ইত্যাদি বিভিন্ন রূপে অনলাইন যোগাযোগ সম্পন্ন করা যায়। কর্মক্ষেত্রে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে অনলাইনে ও বাস্তব জগতে তাৎক্ষনিক যোগাযোগ স্থাপন করতে পারাটা একটি গুরুত্বপূর্ণ গুন। যোগাযোগের দক্ষতা একজন ব্যক্তির পারফর্মেন্স, আত্মবিশ্বাস বাড়ায় এবং তার আশে পাশের থাকা অন্যদেরও অনুপ্রেরণা যোগায়।

নিয়োগকারীরা কেন এই গুন খোঁজ করেন:

চাকরিদাতারা এমন ব্যক্তির খোঁজ করেন যারা মুক্ত ও খোলামেলা ভাবে সহকর্মীদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন, সিনিয়র হোক কিংবা জুনিয়র সবার সাথে আত্মবিশ্বাসের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারেন। এই যুগে এসে ক্লায়েন্টকে কোনরকম বুঝিয়ে আপনার পণ্য বিক্রি করতে পারলেই কাজ শেষ হয়ে যায় না, বরং ক্লায়েন্টের সাথে স্পষ্ট এবং যথাযথ যোগাযোগ রক্ষা করা, তাদেরকে পণ্য সম্পর্কে পূর্ণ ধারণা দেয়া এসব করা বাঞ্ছনীয়। কর্মক্ষেত্রে অনলাইন কিংবা বাস্তব যেকোন পরিবেশ পরিস্থিতিতেই সকলের সাথে মেলামেশা করার মত মন-মানসিকতা এবং নিঃসংকোচ যোগাযোগের দক্ষতা বজায় রাখাটা যেকোন ধরণের চাকরির ক্ষেত্রেই অত্যন্ত জরুরি।

কিভাবে আপনার যোগাযোগের দক্ষতা বাড়াবেন:

★যখনই সুযোগ পাবেন মানুষের সাথে কথোপকথন করবেন এবং যোগাযোগ রাখবেন।
★বেশি বেশি প্রেজেন্টেশন এবং অন্যান্য ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ামূলক কাজে অংশ নিন।
★সাধারন মানুষের সাথে কথা বলার পেছনে সময় ব্যয় করুন; বিশেষ করে অপরিচিতদের সাথে কথা বলার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

২. দলের সাথে কাজ করা

একটা জিনিস যা আমাদের সকলের বোঝা উচিত এবং তরুণ প্রজন্মের সবাইকেও বোঝানো উচিত তা হলো দলবদ্ধভাবে কাজ করার গুরুত্ব। বয়স যতই হোক না কেন, শিশুর মত কম বয়সী, কিংবা একজন শিক্ষার্থী বা কর্মী হিসেবে বয়স যত কম বা বেশি হোক, সবার জন্যই দলবদ্ধভাবে কাজ করার শিক্ষা নেয়া এবং চর্চা করা আবশ্যক। যখনই আমরা এক সাথে সবাই মিলে একটি বিশেষ উদ্দেশ্যে সফল হওয়ার জন্য কাজ করি, তখন কাজটি অনেক বেশি সহজ হয়ে যায় এবং এতে সফল হওয়া বা ভালো ফলাফল পাওয়ার সম্ভাবনাও বহু গুণে বেড়ে যায়। এর মানে এই না যে আমরা একা কখনও কাজ করতে পারবো না; প্রয়োজন হলে আমরা অবশ্যই নিজেদের জন্য আলাদা সময় বের করে নিতে পারি ও নিজের জন্য কিছু করতে পারি, কিন্তু সবকিছুর মধ্যে দলকেই সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিতে হবে।

নিয়োগকারীরা কেন এই গুন খোঁজ করেন:

উত্তরটা খুবই সহজ…একটি কোম্পানি কখনওই শুধুমাত্র একজন ব্যক্তির উপর নির্ভর করে চলে না, হয়ত কোম্পানির সকলকে নেতৃত্ব দিতে পারেন একজন কিন্তু এর সাফল্য এবং কার্যকারিতা নির্ভর করে এতে কর্মরত বহু মানুষের কঠোর পরিশ্রম এবং তাদের অর্জিত ফলাফলের ওপর। নিয়োগকারীরা তাদের কর্মচারীদের মধ্যে উন্নত কর্ম রসায়ন ও বোঝাপড়া তৈরি করার উদ্দেশ্যে দলে নতুন দলমুখী লোকদের নিয়োগ করতে চান। কেননা পারস্পরিক সহযোগিতা কাজের মান আরো উন্নত করে তোলে।

কিভাবে আরো দলমুখী হয়ে ওঠা যায়:

★একটি সর্বজনীন লক্ষ্য অর্জনের জন্য অন্যদের সাহায্য করুন।
★দলবদ্ধ খেলা কিংবা ইভেন্টে যোগ দিন।
★ছুটিতে বা কোন জরুরী অবস্থায় অন্যদের জন্য কাজ করা ও সহযোগিতা করার প্রস্তাব দিন।

৩. খাপ খাইয়ে নেয়ার প্রবণতা

কোন কিছুই সব সময় পরিকল্পনা মত কাজ করে না, তাই নিজেকে বিভিন্ন প্রতিকূল পরিস্থিতি কিংবা জরুরী অবস্থার সাথে খাপ খাইয়ে নেয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। কোন একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে আফসোস না করে সেই পরিস্থিতি মোকাবিলা ও সমাধান করার জন্য উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নেবার চেষ্টা করুন। একজন শিক্ষার্থী হিসেবে ফ্লেক্সিবল পরিবেশ পাওয়ার বা সুযোগ সুবিধা পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম থাকে, কিন্তু আপনাকে সেইরকম পরিস্থিতিতে প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে নিজেকে কীভাবে সেই পরিস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে নেয়া যায় সেটা শিখে নিতে হবে।

নিয়োগকারীরা কেন এই গুন খোঁজ করেন:

আমাদের কর্মক্ষেত্র হচ্ছে এমন একটি গতিময় পরিবেশ যেখানে মুহূর্তের ব্যবধানে যেকোন কিছু বদলে যেতে পারে। সেজন্যই নিয়োগকারীরা এমন কর্মচারীর খোঁজ করেন যারা নতুন কোন পরিবর্তনের সাথে সহজে মানিয়ে নিতে পারেন এবং বিগত দিন কিংবা সময়ের কোন ঝামেলা নিয়ে বার বার অভিযোগ করেন না।

কীভাবে নিজেকে খাপ খাইয়ে নেয়া শিখবেন:

★নতুন কিছু শেখা ও করার জন্য নিজেকে জোর দিন
★নিজেকে চ্যালেঞ্জ করার মাধ্যমে নতুন ও অপরিচিত পরিস্থিতির সাথে অভ্যস্ত হোন এবং সেভাবে কাজ করার অভ্যাস করুন।
★নিজের সীমাকে বুঝুন, লক্ষ্য স্থির করুন এবং সেই লক্ষ্য অর্জনের সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন।

৪. সমস্যা সমাধানের চেষ্টা

একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আপনি সমস্যা অনুধাবন ও তা সমাধান করার সবচেয়ে সেরা সময়ে অবস্থান করেন। আপনাকে প্রতিনিয়ত নতুন সব সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় এবং সেগুলোর সাথে মোকাবিলা করতে হয়। আপনার যদি সমস্যার ব্যাপারে অভিযোগ করার অভ্যাস থেকে থাকে, তাহলে আপনার উচিত নিজের মনকে সমস্যা সমাধানের দিকে ধাবিত করা এবং সেগুলো নিয়ে ভাবা। অভিযোগ করার সময় আমরা আমাদের চিন্তা ভাবনার মধ্যে হারিয়ে যাই আর সম্ভাব্য সমাধান গুলো দেখতে পাই না।

নিয়োগকারীরা কেন এই গুন খোঁজ করেন:

যেই কর্মচারী খুব দ্রুত যেকোন সমস্যা সমাধান ভেবে বের করতে পারেন, তিনি তার কোম্পানির জন্য একটি সম্পদ! যে কোন নিয়োগকারী এমন ব্যক্তিকে বেশি প্রাধান্য দিতে চাইবেন যার সমস্যা সমাধান করার গুন আছে, কেননা ব্যবসায় ক্ষেত্রে প্রায় প্রতিটি পদক্ষেপেই নানা রকম অপ্রত্যাশিত সমস্যা সৃষ্টি হওয়া খুবই স্বাভাবিক।

কীভাবে আপনার সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বাড়াবেন:

★যে কোন পরিস্থিতিতে সমাধান বের করার চেষ্টা করুন, নতুন কোন সমস্যা নয়।
★প্রত্যেকটি নেতিবাচক ফলাফল থেকে ইতিবাচক কিছু খুঁজে বের করার জন্য মন থেকে চেষ্টা করুন।
★মাথা ঠাণ্ডা থাকুন; নিজের মানসিক শান্তিকে বিক্ষিপ্ত হতে না দিয়ে চিন্তা করুন।

৫. সমালোচনামূলক পর্যবেক্ষণ

ডাটা পড়া এবং তার থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য বের করে আনার দক্ষতা সবার মধ্যে থাকে না, আর তাই ব্যবসায় সফল ক্যারিয়ার গড়ে তোলার জন্য আপনাকে এই দক্ষতা বাড়ানোর জন্য চেষ্টা করতেই হবে। সমালোচনামূলক পর্যবেক্ষণ করার দক্ষতা হলো যেকোন পর্যবেক্ষণকে অর্থবহ, সহায়ক এবং লাভজনক ব্যাখ্যায় পরিণত করার বিশেষ ক্ষমতা। বিভিন্ন ঘটনার প্যাটার্ন বোঝা এবং বর্তমান ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সম্ভাব্য সব রকম ফলাফল নির্ণয় করতে পারা ইত্যাদি গুনাবলী এর একটি অংশ।

নিয়োগকারীরা কেন এই গুন খোঁজ করেন:

নিয়োগকারীরা সব সময়ই চিন্তাশীল মানুষ চান! তারা এমন কর্মচারী নিয়োগ দিতে চান যারা বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে চিন্তা করতে পারে এবং আদর্শ ফলাফল লাভের জন্য উদ্ভাবনী বিভিন্ন আইডিয়া দিতে পারেন। তারা এমন ব্যক্তির খোঁজ করে থাকেন যারা সংক্ষিপ্ত ডাটা এবং ঘটনাবলীর মধ্যে সংযোগ খুঁজে বের করতে পারেন এবং কোম্পানির স্বার্থে সেই সংযোগকে কীভাবে কাজে লাগানো যায় তা নিয়ে ভাবেন ও কাজ করেন।

কীভাবে নিজের পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা আরো উন্নত করা যায়:

★অন্যদের কথা শুনুন এবং সে সব কথা থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য খুঁজে বের করুন।
★অন্যদের ব্যাপারে কী জানলেন তা নিজের কাজে প্রয়োগ করুন, হোক তারা পরিবার, বন্ধুবান্ধব, সহকর্মী অথবা আপনার বস।
★নতুন তথ্য শুধুমাত্র দেখেই বসে থাকবেন না; সব সময় অন্য সব দিক থেকে যেকোনো পরিস্থিতিতে তা কাজে লাগানোর চেষ্টা করুন।

৬. দ্বন্দ্বের সমাধান

যেহেতু আমরা সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে ইতোমধ্যে আলোচনা করে ফেলেছি, এবার আমাদের আলাদা করে দেখতে হবে দ্বন্দ্বের সমাধান কী জিনিস। কর্মক্ষেত্রের পরিবেশে বিভিন্ন প্রেক্ষাপট, পরিস্থিতি ও অবস্থা থেকে নানা রক্ম লোক আসেন এবং এক সাথে কাজ করেন। তাই এটা খুবই স্বাভাবিক যে কোন একজন ব্যক্তি বা বস্তুর সাথে অন্য কোন ব্যক্তি বা বস্তুর সংঘর্ষ হবে, নয়ত মতের অমিল হবে। এই ধরণের দ্বন্দ্ব ও পরিস্থিতি যথাযথ কার্যকর ভাবে সমাধান করাটা যেকোন প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের জন্য আবশ্যক।

নিয়োগকারীরা কেন এই গুন খোঁজ করেন:

নিয়োগকারীরা এই ব্যাপারে অনেক বেশি সচেতন থাকেন যে সমস্যা তৈরি হবেই, কিন্তু তারা এমন মানুষেরও খোঁজ করেন যারা এই সব সমস্যার সাথে মোকাবিলা করতে পারবেন এবং সমাধান বের করবেন। যেকোন কোম্পানির সর্বজনীন ও প্রধান লক্ষ্য অর্জনের জন্য কাজ করে যাওয়া এবং সেই পথে তৈরি হওয়া অসংখ্য দ্বন্দ্বের সাথে মোকাবিলা করার এটিই একমাত্র উপায়।

কীভাবে নিজেকে দ্বন্দ্ব সৃষ্টিকারী পরিস্থিতির সাথে মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত করবেন:

★দ্বন্দ্ব বা মতের অমিল সৃষ্টি হওয়ার জায়গাগুলো সরাসরি চিহ্নিত করুন এবং সতর্কতার সাথে কাজ করুন।
★কোন ভাবেই দ্বন্দ্বকে এড়িয়ে যাবেন না এবং সব সময় বোঝাপড়া করার চেষ্টা করবেন।
★নিন্দাত্মক ও নেতিবাচক না হয়ে চেষ্টা করুন সমাধান দিয়ে অন্যদেরকে সাহায্য করতে।

৭. নেতৃত্ব

প্রত্যেকটি কোম্পানিতেই নেতৃত্ব দেয়ার মত লোকের প্রয়োজন হয়। একজন ম্যানেজার বা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং একজন নেতার মধ্যে সূক্ষ্ম ব্যবধান রয়েছে। কোম্পানিতে তৈরি হওয়া অমিল গুলোকে চিনতে পারা এবং একজন নেতার মত কাজ করার মাধ্যমে আপনার আত্মবিশ্বাস প্রতিফলিত হবে এবং সহকর্মী, দলের সদস্য, এমনকি সিনিয়রদের মধ্যেও এক ধরণের অনুপ্রেরণা যোগাবে।

নিয়োগকারীরা কেন এই গুন খোঁজ করেন:

নেতৃত্ব হলো এমন একটি গুন যা শুধুমাত্র আত্ম উন্নয়নের মধ্য দিয়ে বিকশিত হয়। নিয়োগকারীরা যখন কোন কর্মকর্তার জন্য প্রমোশন বা পদোন্নতির কথা ভাবেন তখন এই দক্ষতাকে বিশেষ প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। নিয়োগকারীরা আপনার পেছনে তখনই বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হবেন যখন তারা দেখবেন যে আপনার মধ্যে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়ার যোগ্যতা রয়েছে।

কীভাবে নেতৃত্ব দেয়ার দক্ষতা অর্জন করবেন:

★অন্যদের হুকুম দিয়ে বেড়াবেন না, বরং নিজে ভালো কাজ করার মাধ্যমে নেতৃত্বের নিদর্শন তৈরি করুন।

★অন্যদেরকেও সফল হওয়ার সুযোগ করে দিন।

★আপনার আশে পাশে থাকা কর্মীদের অনুপ্রাণিত করুন, প্রেরণা দিন এবং উৎসাহিত করুন।

শেষ কথা

ঠিক অতীতের মতই বর্তমানে শিক্ষা মানুষের চরিত্র এবং দক্ষতা বৃদ্ধির মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করে চলেছে এবং ভবিষ্যতেও চলতে থাকবে। কিন্তু আজ অবধি আমরা শুধুমাত্র বেসিক দক্ষতা যেমন পড়া, লেখা এবং হিসাব করার দিকে বেশি মনোযোগ দিয়ে আসছি। সেজন্য চর্চার অভাবে অন্যান্য প্রয়োজনীয় গুনাবলীগুলো সুপ্তই থেকে যায়।

আমাদের তরুণ প্রজন্মের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং আত্ম উন্নয়নের জন্য আমরা কি আমাদের সর্বোচ্চ প্রয়াস দিচ্ছি?

প্রচলিত বেসিক দক্ষতাগুলো কী ভবিষ্যতের কর্ম-পরিস্থিতির জন্য যথেষ্ট?

সহজ কথায় বলতে গেলে প্রযুক্তির বর্ধমান গতির সাথে পাল্লা দিতে গিয়ে আমাদের প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা পেছনে পড়ে যাচ্ছে। আমাদের শিক্ষার ধরণে উদ্ভাবনী পরিবর্তনের মাধ্যমে পুঁজি এবং সম্পদের পুনরায় সুষম বণ্টন করতে হবে এবং পরিবর্তনের এক নতুন দুনিয়ার দিকে এগিয়ে যেতে হবে। ভবিষ্যতের জন্য শিক্ষার্থীদের সঠিক ও কার্যকরী শিক্ষা দেয়া এবং বর্তমান কর্মচারীদের নতুন এবং বৈচিত্র্যপূর্ণ দক্ষতা অর্জন এবং উন্নত সুযোগ পাওয়ার ব্যবস্থা করে দেয়ার ব্যাপারে নিয়োগকারী এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উভয়কেই মনোনিবেশ করতে হবে। বর্তমান চাকরির অবস্থা জানতে দেখে নিন আমাদের আরেকটি প্রবন্ধ ২০১৮ সালে বাংলাদেশে যে চাকরি গুলোর প্রধান্য থাকবে

অতএব আপনার আত্মোন্নয়ন এবং এই প্রতিবেদনে আলোচিত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা অর্জন ও উন্নয়নের জন্য ক্রমাগত নিজেকে পরিবর্তন করতে থাকুন, উদ্ভাবন করুন এবং শিখতে থাকুন। এই গুরুত্বপূর্ণ ক্যারিয়ার টিপস গুলো কাজে লাগিয়ে নিজেকে একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য তৈরি করে নিন!


EmoticonEmoticon